WB Semester Display Ads-1

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

ক্লাস 12 ভারত সরকারের অঙ্গসমূহ | Class 12 4th Semester Political Science Question Answer

0
চতুর্থ অধ্যায় : ভারত সরকারের অঙ্গসমূহ PDF
ভূ(caps)মিকা : দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মোট ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। এই ৪০ নম্বরের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সিলেবাসের চতুর্থ অধ্যায়, অর্থাৎ “ভারত সরকারের অঙ্গসমূহ” থেকে মোট ৮ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। এই অংশে একটি ২ নম্বরের প্রশ্ন এবং একটি ৬ নম্বরের প্রশ্ন করতে হবে, ফলে মোট নম্বর হবে ২ + ৬ = ৮। শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য এই অধ্যায় থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৬ নম্বর মানের কিছু প্রশ্ন উত্তরসহ একটি Free PDF আকারে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টারের সাজেশন ই-বুক (PDF) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের Menu Option-এ ক্লিক করে সহজেই দেখতে পারবে।
Class 12 4th Semester Political Science Question Answer

🔹 Class 12 4th Semester Question Answer

[প্রতিটি প্রশ্নের মান 6]
1. ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি বিশ্লেষণ করো।
অথবা, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাজগুলির বিবরণ দাও। [HS-2009]
অথবা, ভারতের শাসনব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সাংবিধানিক ভূমিকা ব্যাখ্যা করো। [HS-2007, 2012, 2017, 2019]
উত্তর : ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী এমন একটি পদ, যা কেন্দ্রীয় সরকারের পুরো কাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রপতি দেশের সাংবিধানিক প্রধান হলেও, প্রশাসন চালানোর বাস্তব দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর হাতেই ন্যস্ত থাকে। মন্ত্রীসভা থেকে সংসদ সব ক্ষেত্রেই তাঁর ভূমিকা নেতৃত্বমূলক। তাই তাঁকে সরকার পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দু বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি : ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা এবং কার্যাবলির প্রকৃতি ও পরিধি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকাকে অনুসরণ করেই নির্ধারিত হয়। নিম্নে তাঁর ক্ষমতাগুলি আলোচনা করা হল-
1. মন্ত্রী নির্বাচন ও দফতর বণ্টনের ক্ষমতা : প্রধানমন্ত্রী তাঁর দলের যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতাদের বেছে নিয়ে মন্ত্রী হতে সুপারিশ করেন। তাঁর পরামর্শেই সংবিধানের ৭৫ নং ধারানুযায়ী রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন এবং কোন মন্ত্রী কোন দফতর দেখবেন তাও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হয়। প্রয়োজনে তিনি মন্ত্রীসভা পুনর্গঠনও করতে পারেন।
2. ক্যাবিনেট সভার নেতৃত্ব দেওয়া : প্রধানমন্ত্রী হলেন ক্যাবিনেটের সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাশালী ব্যক্তিত্ব, তিনি ক্যাবিনেট সভার সভাপতি হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত থাকেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দিকনির্দেশ দেন। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তগুলো প্রধানত তাঁর নেতৃত্বেই গৃহীত হয়।
3. রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে ভূমিকা : প্রধানমন্ত্রী তাঁর দলের সর্বোচ্চ নেতা। তিনি দলের ঐক্য বজায় রাখেন, দলকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল গড়ে তোলেন। দল যাতে শক্তিশালী থাকে এবং সরকারের কাজে সহযোগিতা করে, তার তত্ত্বাবধানও তাঁরই দায়িত্ব।
4. রাষ্ট্রপতির প্রধান উপদেষ্টা : রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থার নানা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেন। মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত, গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজ, আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা ইত্যাদি সবই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে দেন। তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বেশি হলেও কার্যত সেগুলি প্রয়োগ করেন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসারে।
5. মন্ত্রীসভা গঠনে প্রধান ভূমিকা : সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভার সদস্যদের নিয়োগ করেন। অর্থাৎ মন্ত্রীসভা গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা চূড়ান্ত। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নিজ দলের নেতৃত্ববর্গকে মন্ত্রীসভায় স্থান প্রদান করে থাকেন।
6. সংসদে সরকারের মুখ্য প্রতিনিধি ও নীতির পথপ্রদর্শক : প্রধানমন্ত্রী সংসদে সরকারের মুখ্য প্রতিনিধি। সংসদের কাজকর্ম চালানো, বিল উপস্থাপন করা, নীতি ঘোষণা করা ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে তিনি মুখ্য ভূমিকায় থাকেন। সংসদে তাঁর বক্তব্য অনেক সময় সরকারের অবস্থান নির্ধারণ করে দেয়।
উপসংহার : সব মিলিয়ে দেখা যায়, ভারতের শাসন ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীই বাস্তব ক্ষমতার কেন্দ্র। প্রশাসন, মন্ত্রীসভা, সংসদ ইত্যাদি সব জায়গাতেই তাঁর প্রভাব স্পষ্ট। তাই সঙ্গত কারণেই প্রধানমন্ত্রীকে দেশের কার্যকর শাসক বলা হয়।

2. ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং পদমর্যাদা আলোচনা করো। [HS- 2013, '18, '20] 2+4
অথবা, মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা করো।
উত্তর : ভারতে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু রয়েছে। এই ব্যবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীই রাজ্যের প্রকৃত নির্বাহী প্রধান হিসেবে কাজ করেন। সংবিধানের ১৬৪ (১) নং ধারানুযায়ী রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতা বা নেত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করে থাকেন এবং রাজ্যের প্রশাসন, নীতি ও কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব মূলত তাঁর উপরেই থাকে। 
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলি :
1. রাজ্যপাল ও সরকারের মধ্যে মূল সংযোগকারী : রাজ্য সরকারের সমস্ত সিদ্ধান্ত, নীতি, নতুন উদ্যোগ এবং প্রশাসনিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে নিয়মিত অবহিত করেন। মন্ত্রীদের পদবন্টন, অপসারণ, বা আইনসভার অধিবেশন আহ্বান প্রায় সব ক্ষেত্রেই রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসরণ করেন। ফলে দু’পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীরই।
2. রাজ্য আইনসভার নেতা : বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী আইনসভার কাজকর্মের কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থাকেন। কোন দিন অধিবেশন হবে, কোন বিল পেশ হবে, কোন বিষয়ে আলোচনা চলবে এসবই তাঁর নির্দেশে স্থির হয়। গুরুত্বপূর্ণ বিলের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করাও তাঁর অন্যতম কাজ। প্রয়োজন হলে তিনি রাজ্যপালকে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার পরামর্শও দিতে পারেন।
3. রাজ্য মন্ত্রীসভা ও ক্যাবিনেটের প্রধান : মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীসভার কাজ পরিচালনা করেন এবং ক্যাবিনেট মিটিংয়ের সভাপতিত্ব করেন। রাজ্য নীতি, উন্নয়ন পরিকল্পনা বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত সবই তাঁর নেতৃত্বে গ্রহণ করা হয়। তাই কর্মকর্তা ও মন্ত্রীদের কাজও তাঁর নির্দেশ মেনে চলে।
4. রাজনৈতিক দলের মুখ্য নেতা : তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধান নেতা হিসেবে দলের ঐক্য বজায় রাখেন, দলকে শক্তিশালী রাখেন এবং রাজ্যের রাজনীতিতে দলের ভাবমূর্তি ধরে রাখেন। পরবর্তী নির্বাচনে দলকে ক্ষমতায় রাখতে তিনি জনগণের কাছে সরকারের কাজ তুলে ধরেন এবং জনগণের সমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেন।
5. রাজ্যের সাধারণ জনগণের নেতা : মুখ্যমন্ত্রী জনগণের প্রত্যাশা, সমস্যাবলী ও প্রয়োজন বোঝার চেষ্টা করেন এবং সেই অনুযায়ী সরকারি নীতি ও উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জনপ্রশাসনের সাফল্য অনেকটাই তাঁর সিদ্ধান্ত, দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বগুণের ওপর নির্ভর করে।
মুখ্যমন্ত্রীর পদমর্যাদা : সংসদীয় ব্যবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীই রাজ্যের প্রকৃত নির্বাহী প্রধান। কিন্তু কেন্দ্রীয় কাঠামোয় রাজ্যপাল অনেক সময় কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে চলে বলে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর গুরুত্ব যথেষ্ট হলেও, তিনি প্রধানমন্ত্রীর মতো পুরোপুরি স্বাধীন নন। কেন্দ্র ও সংবিধানের বিধান অনুসারে তাঁর ক্ষমতায় কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকে।
উপসংহার : সুতরাং মুখ্যমন্ত্রীই রাজ্যের প্রশাসন, নীতি নির্ধারণ ও জন-ইচ্ছার প্রধান রূপকার। যদিও কেন্দ্রের প্রাধান্যের কারণে তাঁর ক্ষমতা পুরোপুরি স্বাধীন নয়, তবুও রাজ্যের সফলতা অনেকটাই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্ব ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে।

3. ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং পদমর্যাদা আলোচনা করো।
অথবা, রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা করো।
উত্তর : ভারতের প্রতিটি রাজ্যে একজন রাজ্যপাল থাকেন, যিনি সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের আনুষ্ঠানিক প্রধান হিসেবে কাজ করেন। যদিও বাস্তবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার ওপর থাকে, তবুও আইন, প্রশাসন ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মূলত কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যে সংবিধানের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করেন।
রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলি :
১) শাসন-সংক্রান্ত ক্ষমতা : সংবিধানের 154 নং ধারা অনুসারে রাজ্যপাল নিজে অথবা তাঁর অধস্তন কর্মচারীদের মাধ্যমে রাজ্যের শাসনক্ষমতা প্রয়োগ করে। তিনি মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী অন্যান্য মন্ত্রীদেরও নিয়োগ দেন। এছাড়া অ্যাডভোকেট জেনারেল, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন উচ্চপদে হয় তাঁরই হাতে নিয়োগ হয়। প্রয়োজনে রাজ্যের শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়লে তিনি ৩৫৬ ধারা জারি করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করতে পারেন।
২) আইন-সংক্রান্ত ক্ষমতা : রাজ্য আইনসভার অধিবেশন ডাকতে, স্থগিত রাখতে বা বিধানসভা ভেঙে দিতে রাজ্যপালের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আইনসভায় পাস হওয়া কোনো বিল তাঁর সম্মতি ছাড়া আইন হতে পারে না। অর্থবিল ছাড়া অন্য বিল রাজ্যপাল চাইলে পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন কিংবা রাষ্ট্রপতির অনুমতি নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে পারেন। সংসদ না বসলে তিনি অধ্যাদেশ জারি করতেও পারেন।
৩) অর্থ-সংক্রান্ত ক্ষমতা : রাজ্য সরকারের বার্ষিক বাজেট রাজ্যপালের অনুমোদন নিয়ে আইনসভায় উত্থাপন করা হয়। জরুরি আর্থিক পরিস্থিতিতে আকস্মিক ব্যয় তহবিল থেকে অর্থ ব্যবহারের ক্ষমতাও তাঁর হাতে থাকে।
৪) বিচার-সংক্রান্ত ক্ষমতা : রাজ্যের হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি রাজ্যপালের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা আদালত, দায়রা আদালতের বিচারপতিদের নিয়োগও রাজ্যপালের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। তিনি কিছু ক্ষেত্রে দণ্ড মকুব বা শাস্তি লঘু করতে পারেন, তবে মৃত্যুদণ্ড ক্ষমা করার ক্ষমতা তাঁর নেই।
৫) স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা : সংবিধানের ১৬৩ ধারায় বলা হয়েছে যে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে রাজ্যপাল নিজের বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যেমন- রাজ্য আইনসভায় পাস হওয়া কোনো বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো, বা রাষ্ট্রপতি যদি কোনো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দায়িত্ব তাঁর হাতে দেন, তখন সেই দায়িত্ব পালনেও তিনি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের বৈধতা সম্পর্কে আদালতে কোনো প্রশ্ন তোলা যায় না।
রাজ্যপালের পদমর্যাদা : রাজ্যপালকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন এবং তাঁর মেয়াদও নির্ভর করে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর। তিনি মূলত কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তাই যে রাজ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য ভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়, সেখানে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
উপসংহার : অতএব, রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে প্রশাসন, আইনসভা ও বিচারব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যদিও কার্যকর ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকে, তবুও রাজ্যপাল সংবিধানের রক্ষক হিসেবে রাজ্যের শাসনব্যবস্থাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সাহায্য করেন।

4. ভারতের সংসদের দুটি কক্ষের মধ্যে সাংবিধানিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো। 
অথবা, রাজ্যসভা ও লোকসভার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো। 
উত্তর : ভারতের পার্লামেন্ট দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত লোকসভা ও রাজ্যসভা। দুটি কক্ষের কাজ আলাদা হলেও দেশের আইন প্রণয়ন, শাসন নিয়ন্ত্রণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে চলমান রাখতে তারা একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তাই এই দুই কক্ষের পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝা সংসদীয় শাসনব্যবস্থাকে বুঝতে সাহায্য করে।
রাজ্যসভা ও লোকসভার পারস্পরিক সম্পর্ক :
1. সাধারণ আইন ও সংবিধান সংশোধনে দুই কক্ষের সমান ভূমিকা : অর্থ বিল ছাড়া অন্যান্য সব সাধারণ বিল এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে লোকসভা ও রাজ্যসভা দু’কক্ষই সমান ক্ষমতা ভোগ করে। কোনো সাধারণ বিল তখনই আইনে পরিণত হয়, যখন দুই কক্ষই তা অনুমোদন করে। তাই আইন প্রণয়নে উভয় কক্ষ পরস্পরের পরিপূরক।
2. বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যসভার বাড়তি ক্ষমতা থাকে : জাতীয় স্বার্থে রাজ্য তালিকার কোনো বিষয়ে পার্লামেন্টকে আইন করার অনুমতি দেওয়া (ধারা 249) বা নতুন সর্বভারতীয় চাকরি তৈরির অনুমোদন দেওয়া (ধারা 312) এসব ক্ষমতা কেবল রাজ্যসভার। এছাড়া উপরাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির প্রস্তাবও শুধুমাত্র রাজ্যসভায় উত্থাপন করা যায়। তাই নির্দিষ্ট কিছু সাংবিধানিক বিষয়ে রাজ্যসভার ভূমিকা বেশি।
3. মন্ত্রীসভাকে নিয়ন্ত্রণে লোকসভার স্পষ্ট প্রাধান্য : ভারতে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু হওয়ায় মন্ত্রীসভা বা ক্যাবিনেট শুধু লোকসভার কাছে দায়বদ্ধ। লোকসভার সদস্যরা যদি অনাস্থা প্রস্তাব পাস করে, তবে সমগ্র মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ করতে হয়। রাজ্যসভার কাছে এ ধরনের কোনো ক্ষমতা নেই। ফলে শাসন পরিচালনায় লোকসভার অবস্থান অনেক শক্তিশালী।
4. অর্থ বিলে লোকসভার সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব : অর্থ বিল সবসময় লোকসভায় উত্থাপিত হয় এবং অর্থ বিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত লোকসভাই নেয়। রাজ্যসভা চাইলে মতামত দিতে পারে, কিন্তু লোকসভা সেই মতামত মানতে বাধ্য নয়। এমনকি রাজ্যসভা 14 দিনের মধ্যেও সিদ্ধান্ত না দিলে বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাস হয়ে যায়। তাই অর্থনৈতিক বিষয়ে লোকসভা স্পষ্টভাবে বেশি ক্ষমতাবান।
5. মতবিরোধ হলে যৌথ অধিবেশনে সাধারণত লোকসভার মতই কার্যকর হয় : কোনো সাধারণ বিল নিয়ে দুই কক্ষের মধ্যে মতভেদ হলে রাষ্ট্রপতি যৌথ অধিবেশন ডাকেন। এই অধিবেশনে লোকসভার সদস্য বেশি হওয়ায় সাধারণত লোকসভার মতামতই প্রাধান্য পায়। ফলে বাস্তব ক্ষেত্রে দুই কক্ষ সমান হলেও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে লোকসভার প্রভাব তুলনামূলক বেশি।
উপসংহার : অতএব, ভারতের সংসদের দুই কক্ষ পরস্পরের সহযোগিতা ও ভারসাম্যের মাধ্যমে কাজ করলেও বাস্তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ক্ষেত্রে লোকসভার প্রাধান্য স্পষ্ট। তবুও রাজ্যসভাও কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক রক্ষা এবং বিশেষ সাংবিধানিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

5. ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের উপর একটি টীকা লেখো।
উত্তর : ভারতের বিচারব্যবস্থায় ক্রেতা আদালত বিশেষ ধরনের আদালত, যা ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য গঠিত। এই আদালতের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতা প্রতারিত হলে তিনি দ্রুত বিচার পেতে পারেন। ক্রেতা আদালতের অপর নাম ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। 1986 সালে ভারতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হয়।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের উদ্দেশ্য : ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের মূল লক্ষ্য হল ক্রেতাদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষা করা। সহজ ভাষায়, কোনো ক্রেতা প্রতারিত হলে তার অভিযোগের দ্রুত ও ন্যায্য সমাধান করাই এই আদালতের প্রধান উদ্দেশ্য।
ক্রেতা আদালতের বিভিন্ন স্তর : 
1. জেলা স্তরের ক্রেতা আদালত : প্রতিটি জেলার ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য জেলা আদালত গঠিত হয়। এখানে একজন জেলা জজ সভাপতির দায়িত্বে থাকেন এবং ৫ বছরের জন্য বা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত পদে থাকেন। ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মামলার বিচার করা হয়।
2. রাজ্য স্তরের ক্রেতা আদালত : এই রাজ্য স্তরে গঠিত ক্রেত আদালতের নাম হল রাজ্য কমিশন। এই আদালতে একজন হাইকোর্টের বিচারপতি সভাপতি হিসেবে থাকেন। ২০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে মামলা দেখানো হয়। সদস্যরা ৫ বছরের জন্য বা ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত পদে থাকেন।
3. জাতীয় স্তরের ক্রেতা আদালত : ত্রিস্তরবিশিষ্ট ক্রেতা আদালতের সর্বোচ্চ স্তরটি হল জাতীয় স্তর। এতে ৫ জন সদস্য থাকেন এবং একজন সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সভাপতি হিসেবে থাকেন। ১ কোটি টাকার বেশি ক্ষতিপূরণের মামলা এখানে দায়ের করা যায়।
ক্রেতা আদালতের বৈশিষ্ট্য : 
1. ত্রিস্তর বিন্যস্ত ব্যবস্থা : ক্রেতারা বিক্রেতার নিকট থেকে ক্রয় করা পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে, সত্বর তার প্রতিবিধানের জন্য ক্রেতা সুরক্ষা আইনে ত্রিস্তরবিশিষ্ট আদালত স্থাপন করা হয়েছে।
2. আইন বিশেষজ্ঞদের প্রায়াজন নেই : ক্রেতারা এইরূপ আদালতে এককভাবে নালিশ জানানোর অধিকার ভোগ করে থাকে। অর্থাৎ অভিযোগপত্র দাখিল করার জন্য কোনো আইন বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় না।
ক্ষমতা ও কার্যাবলি : 
1. উপভোক্তার স্বার্থ রক্ষা : ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের প্রধান দায়িত্ব হল ক্রেতাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা। ক্রেতারা কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করার সময় প্রতারিত হলে, এই আদালত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরের আদালতগুলোর মাধ্যমে অভিযোগের তদন্ত ও সমাধান হয়, যাতে ক্রেতারা ক্ষতিপূরণ বা ন্যায়বিচার সহজে পান।
2. উপভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি : শুধুমাত্র অভিযোগ মীমাংসা করাই নয়, আদালত ক্রেতাদের সচেতন করার কাজও করে। বিভিন্ন কর্মশালা, জনসচেতনতা অভিযান এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অসৎ ব্যবসায়ীদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায় শেখানো হয়। এতে ক্রেতারা তাদের অধিকার এবং আইন সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন।
উপসংহার : ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ভারতের বিচার ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, যা ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিষ্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চতুর্থ অধ্যায় "ভারত সরকারের অঙ্গসমূহ" থেকে 2 নম্বরের প্রশ্ন এবং 6 নম্বর মানের আরো অনেকগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আছে। সেগুলি পেতে হলে আমাদের WB Semester Team প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুকগুলি (PDF) নিতে হবে। সাজেশন ই-বুক সম্পর্কে জানতে Menu Option এ ক্লিক করো বা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
File Details :
PDF Name : ক্লাস 12 ভারত সরকারের অঙ্গসমূহ
Size : 1 MB
No. of Pages : 2
Mode : Read-only (Online)
Download Link : Click here To Download

আরো পড়ুন প্রশ্নোত্তর
1. প্রথম অধ্যায় : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক PDF Click here
2. দ্বিতীয় অধ্যায় : প্রধান আঞ্চলিক সংগঠনসমূহ PDF Click here
3. ডাকঘর নাটকের প্রশ্ন উত্তর PDF Click here
4. তৃতীয় অধ্যায় : বিশ্বায়ন PDF Click here

Thanks,
WB Semester Team 
📞 & 💬 9883566115

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.