প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর
🔹 প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF
1."চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির"- এ কথা কবি কোন্ প্রসঙ্গে বলেছেন? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো। ২+৩
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'নৈবেদ্য' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'প্রার্থনা' কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে।
এই কবিতায় কবি এক নতুন স্বদেশের কল্পনা করেছেন। সেই মুক্ত স্বদেশে এবং আদর্শ সমাজব্যবস্থায় কবি একজন মানুষকে যেভাবে দেখতে চান, তার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।
কবি প্রত্যাশা করেছেন এমন এক ভারত, যেখানে মানুষ তার নিজের অধিকার নিয়ে সর্বদা বেঁচে থাকবে। এই সমাজে সাধারণ মানুষদের মধ্যে অস্তিত্ব হারানোর ভয়, ক্ষমতাবানদের ভয়, অন্ধবিশ্বাসের অনুগত হওয়ার ভয়, মুক্তকন্ঠ বিসর্জনের ভয় ইত্যাদি নানা রকম ভয় সর্বদা ঘিরে থাকে। এই ভয়ের প্রসঙ্গ কবি 'নৈবেদ্য' কবিতাও উল্লেখ করেছেন।যার নিজের শক্তি বা সাহস নেই, সে অন্যের অধীনে চলে যায়, ক্ষমতাবানদের সামনে মাথা নত করে নিজেকে বিকিয়ে সমর্পণ করে। ফলে তার জীবনে ভয় স্থায়ী হয়ে যায়। এই মানুষেরা মাথা উঁচু করার মতো সাহস দেখাতে পারে না। মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকলে মানুষ ভয়হীন ভাবে মানুষ মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবে। একদিকে মানুষের ভেতরের আত্মিক জাগরণ, আর অন্যদিকে উপযুক্ত সামাজিক পরিবেশের মাধ্যমে কবি তাঁর সেই আকাঙ্ক্ষিত ভারতকে পেতে চান-"চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির"।
2.'প্রার্থনা' কবিতায় কবি কীভাবে ভারতবর্ষকে স্বর্গে জাগরিত করার কথা বলেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখ। [HS Model Question]
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'নৈবেদ্য' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'প্রার্থনা' কবিতা থেকে উক্ত প্রশ্নটি নেওয়া হয়েছে।
এই কবিতায় কবি এক উদার উন্নততর ভারতের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন। সেই ভারতে প্রতিটি মানুষের মন থাকবে ভয়শূন্য, মাথা থাকবে উঁচু হয়ে। তারা মুক্তজ্ঞানচর্চার পথ অনুসরণ করবে।মানুষ পৃথিবী বলতে শুধু নিজের বাড়ি বুঝবে না, নিজের সুখকেই প্রধান মনে করবে না, বরং বিশ্বমানবতাকেই তার লক্ষ্য করবে। তার প্রতিটা সংলাপ হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে উঠে আসবে। অর্থাৎ মানুষের যাবতীয় কর্মধারা পরিচালিত হবে সমষ্টির কল্যাণের জন্য।
কবি এমন এক ভারত চেয়েছেন, যেখানে কুসংস্কার বা অন্ধ প্রথা জীবনের চলার পথকে অবরুদ্ধ করবে না, চরিত্রের দৃঢ়তা এবং আদর্শবদ্ধতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। যিনি সমস্ত কর্ম-চিন্তা-আনন্দের পথপ্রদর্শক, কবি সেই ঈশ্বরকে উদ্দেশ করে বলেছেন যে, যা কিছু দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যায়, তার বিরুদ্ধে আঘাত করে কবি ভারতকে এক স্বর্গীয় মহিমা দিতে চান। তাই সর্বমানবতার উপরে প্রতিষ্ঠিত এক উদার অথচ দৃঢ় আদর্শবদ্ধ স্বদেশকে কল্পনা করেছেন কবি রবীন্দ্রনাথ।
3."নিত্য যেথা তুমি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা”- কবি এই 'নেতা'- কে উদ্দেশ করে কী প্রার্থনা করেছেন? কবির যে ঈশ্বরবোধের প্রকাশ ঘটেছে এখানে তা ব্যাখ্যা করো। ২+৩
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'নৈবেদ্য' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'প্রার্থনা' কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে।
কবি এই কবিতায় তাঁর আকাঙ্ক্ষার সুন্দর ভারত গড়ে তোলার পথে বাধা যে-সমস্ত বিষয়গুলি রয়েছে সেগুলিকে দূর করার জন্য 'সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা'- অর্থাৎ এখানে কবি ঈশ্বরকে আহ্বান করেছেন। সমস্ত স্বার্থপরতা, ভয়, সীমাবদ্ধতা, আচার-সংস্কারকে দূরে সরিয়ে, পরাগতির সমস্ত চিহ্নগুলিকে আঘাত করে তিনি যেন ভারতবর্ষকে স্বর্গীয় মহিমা দান করেন-কবি সেই প্রার্থনাই উল্লিখিত অংশে করেছেন। কবি রবীন্দ্রনাথ 'মানুষের ধর্ম' প্রবন্ধে লিখেছেন-
"আমাদের অন্তরে এমন কে আছেন যিনি মানব অথচ যিনি ব্যক্তিগত মানবকে অতিক্রম ক'রে 'সদা জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ'। তিনি সর্বজনীন সর্বকালীন মানব। তাঁরই আকর্ষণে মানুষের চিন্তায় ভাবে কর্মে সর্বজনীনতার আবির্ভাব।"
সে কারণেই ঈশ্বরকে 'সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা' বলে রবীন্দ্রনাথ উল্লেখ করেছেন। মানুষের মনের মধ্যেই তার অধিষ্ঠান। সুতরাং কবি যখন ঈশ্বরকে উদ্দেশ করে আঘাতের আহ্বান জানান, তখন আসলে তিনি সকল মানুষের ভেতরের মানবতাবোধ বা ন্যায়ের শক্তিকে জাগ্রত করার জন্যই ডাক দেন।”। কারণ রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ঈশ্বর বাইরের কোনো আলাদা শক্তি নয়, মানুষের মনের মধ্যেই নিহিত।
4."নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ" - 'পিতঃ' বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে? কাকে, কোথায় আঘাত করার কথা বলা হয়েছে? ২+৩
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'নৈবেদ্য' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'প্রার্থনা' কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে।
এই কবিতার উল্লিখিত অংশে যিনি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা, সেই ঈশ্বরকেই পিতঃ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের কাছে ঈশ্বর হল এমন একটি শক্তি বা মূল্য যা সব মানুষের মধ্যে, সব সময়ই বিরাজমান থাকে। মানুষের ধর্মে রবীন্দ্রনাথ বলছেন, আমাদের অন্তরে একজন আছেন, যিনি মানুষ হলেও সাধারণ ব্যক্তিগত মানুষ নন; তিনি ব্যক্তিগত সীমা ছাড়িয়ে সকল মানুষের হৃদয়ে বাস করেন। তিনি সর্বজনীন ও চিরন্তন মানব । তাঁর অনুপ্রেরণায় মানুষের চিন্তায় ও কাজে মানবতার প্রকাশ ঘটে। সেকারণেই ঈশ্বরকে 'সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা' বলে উল্লেখ করেছেন।
রবীন্দ্রনাথের কাছে ব্রহ্মজ্ঞান হল নিজের আত্মা ও ঈশ্বরের একত্ব উপলব্ধি। কবি 'ঔপনিষদিক ব্রহ্ম' শীর্ষক বক্তৃতায় লিখেছিলেন - যে ব্যক্তি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সমগ্র সংসারকে দেখে, তার কাছে সংসারই একমাত্র প্রধান বিষয় নয়। সে যা ভোগ করে তা ঈশ্বরের দান হিসেবে গ্রহণ করে, আর সেই ভোগ কখনও ধর্মের সীমা লঙ্ঘন করে না। সুতরাং কবি যখন ঈশ্বরকে উদ্দেশ করে পরাগতির সূচকগুলিতে আঘাতের আহ্বান জানান, সেই আহ্বান আসলে কবি সর্বমানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ মানুষদের উদ্দেশ্য করেই করছেন। সে আঘাতের লক্ষ হবে সমস্ত আত্মগত সুখের অবসান, চিন্তাচেতনার বদ্ধতা থেকে মুক্তি এবং যে-সমস্ত আচার-বিচার-সংস্কার সভ্যতার গতিপথকে অবরুদ্ধ করতে পারে তার অবসান ঘটানো।
5. ‘প্রার্থনা’ কবিতাটির মূল বক্তব্য নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা কর। ৫
উত্তর : এই প্রশ্নের উত্তর PDF এর মধ্যে আছে। PDF Download করার অপশন নিচে দেওয়া আছে।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
WB Semester Team প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণীর চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুকগুলি (PDF) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইটের উপরের Menu অপশনে ক্লিক করুন। উপরের প্রশ্ন-উত্তর গুলি যদি আপনাদের কাজে লাগে, তবেই আমাদের এই পরিশ্রম সার্থক হবে।
File Details :
PDF Name : প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF
Size : 1.3 mb
No. of Pages : 2
Download Link : Click here To Download
আরো পড়ুন | প্রশ্নোত্তর |
---|---|
1. 'Three Questions' গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
2. হারুন সালেমের মাসি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Click here |
3. দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা প্রশ্নপত্র PDF | Click here |
WB Semester Team
📞 & 💬 9883566115