WB Semester Display Ads-1

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

ক্লাস 12 জাতি গঠন ও আনুষঙ্গিক বিষয় | দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | Class 12 Semester 4 History Question Answer

0

ক্লাস 12 ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় : জাতি গঠন ও আনুষঙ্গিক বিষয় : ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ভারত-পাক যুদ্ধ


ভূ(caps)মিকা : দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস বিষয়ে 40 নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। এই 40 নম্বর এর মধ্যে ইতিহাস সিলেবাসের চতুর্থ অধ্যায় : 'জাতীয়তাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ' থেকে মোট 7 নম্বর আসবে। অর্থাৎ 3 নম্বর মানের  2 টি প্রশ্ন থাকবে, যে-কোন 1 টি করতে হবে এবং 4 নম্বর মানের 2টি প্রশ্ন থাকবে, যে-কোন 1টি করতে হবে। তাহলে মোট 3+4=7 নম্বর। এই পর্বে দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস সিলেবাসের ষষ্ঠ অধ্যায় : 'জাতি গঠন ও আনুষঙ্গিক বিষয় : ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ভারত-পাক যুদ্ধ' থেকে 3 নম্বর মানের এবং 4 নম্বর মানের প্রশ্ন উত্তরসহ PDF নিচে দিলাম। তবে দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুকগুলি(PDF) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের Menu Option এ ক্লিক করে দেখতে পারেন। .

দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

🔹 দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

[প্রতিটি প্রশ্নের মান : 3/4]
1. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট কী ছিল ?
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি দেশ তৈরি হয়। পাকিস্তান ছিল দুটি আলাদা অংশে - পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু ধর্মের ওপর ভিত্তি করে গঠিত এই রাষ্ট্র বেশিদিন একসঙ্গে থাকতে পারেনি। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ভাষা, সংস্কৃতি, ভৌগোলিক অবস্থা ও শাসননীতির পার্থক্য থেকেই বিরোধ সৃষ্টি হয়। ফলে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট : 
1. ভৌগোলিক দূরত্ব : পাকিস্তান রাষ্ট্র শুরু থেকেই দুর্বল ছিল। কারণ, পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ছিল অনেক ভৌগোলিক দূরত্ব, আর মাঝখানে ছিল ভারত। কিন্তু একটি দেশের একতা বজায় রাখতে ভৌগোলিকভাবে একসঙ্গে থাকা জরুরি। এই দূরত্বের জন্যই দেশের শাসনব্যবস্থা চালাতে বড় সমস্যা তৈরি হয়।
2. ভাষাগত বৈষম্য : পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বাংলাভাষী, আর পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ উর্দুভাষী। পূর্ব পাকিস্তান চেয়েছিল বাংলা রাষ্ট্রভাষা হোক, কিন্তু সরকার শুধু উর্দুকেই স্বীকৃতি দেয়। তাই ভাষা নিয়ে দুই অঞ্চলের বিরোধ বাড়ে।
3. অর্থনৈতিক শোষণ ও বঞ্চনা : পূর্ব পাকিস্তান ছিল কৃষিপ্রধান ও সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চল, আর পশ্চিম পাকিস্তান ছিল শুষ্ক ও কম উর্বর। তাই পশ্চিম পাকিস্তান উপনিবেশের মতো আচরণ করে পূর্ব পাকিস্তানের শস্য ও সম্পদ ব্যবহার করত। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ অর্থনৈতিক শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়।
4. প্রশাসনিক ও চাকুরিক্ষেত্রে বৈষম্য : কেন্দ্রীয় সরকার ও সেনাবাহিনীর সব গুরুত্বপূর্ণ পদে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ ছিল। পূর্ব পাকিস্তানেও উচ্চপদে তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হতো। ফলে শিক্ষিত বাঙালিরা চাকরিতে সুযোগ পেত না। এই অন্যায় আচরণে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
5. ভাষা আন্দোলনের সূচনা : পাকিস্তানের ৫৪% মানুষের ভাষা ছিল বাংলা, কিন্তু ১৯৪৭ সালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্তে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। তখন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় এবং বাংলা ভাষার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে আন্দোলন তীব্র রূপ নেয়, যার ফলে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের সূচনা হয়। 
মূল্যায়ন : পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব, ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক পার্থক্য তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে। ১৯৭১ সালে মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের আন্দোলন শুরু হয়। এই বিরোধের ফলেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠিত হয়।

3. বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবর রহমানের ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান নামে নতুন দেশ সৃষ্টি হয়। দেশটি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। শেখ মুজিবর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালির ভাষা, অধিকার ও স্বাধীনতার দাবি তোলেন। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এই যুদ্ধের প্রধান প্রেরণা ও নেতা।
মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা :
1. আয়ুব খানের বিরোধিতা ও দমননীতি : পাকিস্তানের শাসক আয়ুব খান শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মসূচিকে বিপজ্জনক বলে অভিযোগ করেন। তিনি মুজিবর রহমানকে ‘প্রথম শত্রু’ বলেন এবং আওয়ামি লিগের সমর্থকদের ওপর নির্যাতন চালান। বঙ্গবন্ধুকে বহুবার গ্রেফতার করা হলেও বাঙালির জাতীয় চেতনার আন্দোলন চলতে থাকে। 
2. মুজিবর রহমানের ছয় দফা কর্মসূচি : ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবর রহমান লাহোরে ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেগুলি হল-
(i) পাকিস্তানকে একটি যুক্তরাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। 
(ii) প্রদেশের হাতে প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয় ছাড়া সব ক্ষমতা দিতে হবে।
(iii) পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য পৃথক মুদ্রা চালু করতে হবে। 
(iv) প্রদেশকে কর নির্ধারণের ক্ষমতা দিতে হবে।
(v) আঞ্চলিক সরকারকে বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির অধিকার দিতে হবে।
(vi) পূর্ব পাকিস্তানের প্রয়োজনে আধাসামরিক বাহিনী গঠনের অধিকার দিতে হবে।
3. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান : ছয় দফা ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আয়ুব সরকার মুজিবরকে 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা'-য় গ্রেপ্তার করলে ছাত্ররা ১১ দফা নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়, ফলে সরকার মুজিবর ও তাঁর সহযোগীদের মুক্তি দেয়।
4. আওয়ামি লিগের সাফল্য : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টির মধ্যে ১৬০টি আসনে জয় পায়। পশ্চিম পাকিস্তানে ভুট্টোর দল পিপলস পার্টি ১৪০টি আসনের মধ্যে ৮৮টি আসন পায়। ফলে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের সম্ভাবনা আরও জোরদার হয়।
5. ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের জন্ম : ১৯৭১ সালে তাঁর আহ্বানে মুক্তি আন্দোলন শুরু হয়। তিনি ৭ মার্চ স্বাধীনতার আহ্বান জানান। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনারা বাঙালিদের ওপর আক্রমণ চালায়, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। শেষে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
মূল্যায়ন : পাকিস্তান গঠনের পর ভাষা ও সংস্কৃতির পার্থক্যে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এর ফলেই জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল ‘বঙ্গবন্ধু’ শেখ মুজিবুর রহমানের। তাই তার নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

3. বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে টাকা লেখো। 
অথবা, 
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব উল্লেখ করো।
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান নামে নতুন দেশ সৃষ্টি হয়। দেশটি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল—পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। ভাষা ও সংস্কৃতির পার্থক্যের কারণে দুই অংশের মধ্যে ধীরে ধীরে বিরোধ ও মতভেদ দেখা দেয়।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন :
1. ভাষা আন্দোলনের পটভূমি : ভারত বিভাজনের ফলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অংশ হয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামে পরিচিত হয়। এখানকার মানুষ এক ধর্ম ও এক রাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তারা হতাশ হয়। পাকিস্তান গঠনের কিছুদিন পরেই ভাষা নিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এই ভাষা আন্দোলন পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেরণা দেয়।
2. ভাষাগত বিরোধ : পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ মূলত উর্দুভাষী ছিলেন, আর পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বাংলাভাষী। তাই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ চেয়েছিল বাংলা যেন রাষ্ট্রভাষা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করে এবং বাংলাভাষীদের ওপর তা জোর করে চাপিয়ে দেয়। এতে দুই অংশের মধ্যে ভাষা নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।
3. ভাষা আন্দোলনের সূচনা : ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় ‘গণ আজাদি লিগ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। তখনই বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ওঠে। ড. শহীদুল্লা প্রস্তাব দেন, পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রভাষা হোক বাংলা এবং দ্বিতীয় হোক উর্দু। একই বছরের জুন মাসে ‘সিল্লাত’ পত্রিকায় মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে লেখা হয় এবং ডিসেম্বরে গঠিত হয় 'প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ'। কিন্তু পরে জিন্নাহ ঘোষণা করেন যে, 'উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে, অন্য কোনো ভাষা নয়'।
8. ভাষা আন্দোলনের চরম পরিণতি : ১৯৫২ সালের শুরুতে ভাষা আন্দোলন তীব্র হয়। ‘সর্বদলীয় ভাষা কমিটি’ সভা-সমাবেশ করলে, সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে তা নিষিদ্ধ করে। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ধারা ভঙ্গ করলে পুলিশ গুলি চালায়, ফলে মহম্মদ সালাউদ্দিন, আবুল বরকত প্রমুখ নিহত হন। ক্রমে এই আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয় এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
উপসংহার : ভাষা আন্দোলন ছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের আত্মমর্যাদা ও অধিকার রক্ষার সংগ্রাম। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের পথ তৈরি হয়।

4. বাংলাদেশ-এর মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা লেখো। 
অথবা,
ভারত কেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জড়িত হয় ?
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হল দীর্ঘমেয়াদি ঘটনার ফলশ্রুতি। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা :
1. বাংলাদেশের পরিস্থিতি : পাকিস্তান গঠনের পর পূর্ব বাংলা পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত হয়। কিন্তু পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রায় পার্থক্য ছিল। পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব বাংলাকে শোষণ ও বঞ্চনা করত। এই অবিচারের ফলে পূর্ব বাংলায় স্বাধীনতার দাবি জোরদার হয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়।
2. ভারত অংশগ্রহণের কারণ : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তানে সেনা পাঠিয়ে আন্দোলন দমন শুরু করেন। শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করে বাঙালিদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ফলে বহু মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয়, এতে ভারতের সমাজ ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইন্দিরা গান্ধি ঘোষণা করেন, দেশের নিরাপত্তার প্রয়োজনে ভারত পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করে ভারত এক মিত্র দেশ পায় এবং ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
3. যৌথবাহিনী গঠন : ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারতীয় অঞ্চলে বোমা ফেলে। তখন ভারত পাল্টা আক্রমণ চালায়। জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনা মিলে যৌথবাহিনী গঠন করে। তাদের প্রবল আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটে, আর ভারতীয় বিমানবাহিনী চট্টগ্রামসহ বহু এলাকা অবরোধ করে।
4. আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ভারতের ভূমিকা : প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ভারতের অবস্থান জানিয়ে দেন। তিনি আমেরিকা, রাশিয়া ও ইংল্যান্ডসহ বহু দেশে সফর করে শরণার্থী সমস্যা ও স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরি করেন। কূটনৈতিক প্রস্তুতির পর ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
5. ভারত-পাক যুদ্ধ : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধ শুরু হয়। ভারতের প্রবল আক্রমণে পাক-বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ করেন। ১৬ ডিসেম্বর তিনি ৯৩ হাজার সেনাসহ যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করলে ইন্দিরা গান্ধি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন।
মূল্যায়ন : বহু সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

7.  ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপট কী ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন দেশ গঠিত হয়। কিন্তু পাকিস্তান শুরু থেকেই ভারতবিরোধী মনোভাব পোষণ করে। এর ফলেই দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে পরাজিত হয়, আর ১৯৭১ সালে আবার সেই সংঘাতের পুনরাবৃত্তি ঘটে।
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপট :
1. ভারত-পাক যুদ্ধের পটভূমি : ভারত শান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে এবং ভারতের বিদেশনীতির ভিত্তি জোটনিরপেক্ষতা । তবে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বে আঘাত এলে ভারত লড়াই করতে প্রস্তুত। ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধ আসলে পাকিস্তানের নিজের অভ্যন্তরীণ সংকট ও ভুল নীতির ফল ছিল।
2. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা : পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন ও অবহেলায় অসন্তুষ্ট ছিল। তারা বাংলা ভাষার মর্যাদা ও শোষণ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এই দাবি আরও জোরালো হয়। শেখ মুজিবর রহমান ও আওয়ামি লিগ পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে নেতৃত্ব দেন। কিন্তু সামরিক সরকার দমননীতি চালায়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লিগ জয়ী হলেও সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। এর প্রতিবাদে জনতা আন্দোলনে নামে। ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়া খান সেনা পাঠিয়ে দমন অভিযান শুরু করেন। তখন শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশ ঘোষণার আহ্বান জানান, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
3. ভারতের সহানুভূতি ও সমর্থন : ভারত সাধারণত অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের অস্থিরতা ভারতের ওপর প্রভাব ফেলে। পাকিস্তানি সেনাদের নির্যাতনে বহু মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। মানবিক কারণে ভারত তাদের আশ্রয় ও সহায়তা দেয়, যার ফলে সীমান্ত নিরাপত্তা ও দেশের অর্থনীতিতে বড় চাপ পড়ে।
মূল্যায়ন : এই পরিস্থিতিতে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনের চেষ্টা করে। কিন্তু ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বিনা প্ররোচনায় ভারতের পশ্চিম সীমান্তে আক্রমণ চালায়। ফলে ভারত বাধ্য হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ শুরু করে, শুরু হয় ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান পরাজিত হয়ে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় : 'জাতি গঠন ও আনুষঙ্গিক বিষয়' এই অধ্যায় থেকে আমাদের সাজেশন E-Book(PDF)গুলিতে আরো অনেকগুলি 3 নম্বর মানের, ও 4 নম্বর মানের খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আছে। সেগুলি পেতে হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন অথবা উপরের Menu Option ক্লিক করে দেখতে পারেন।
File Details :
PDF Name : ক্লাস 12 জাতি গঠন ও আনুষঙ্গিক বিষয় PDF
Size : 1 MB
No. of Pages : 2
Mode : Read-only (Online)
Download Link : Click here To Download

আরো পড়ুন প্রশ্নোত্তর
1. ক্লাস 12 বিদ্রোহ এবং ব্রিটিশরাজ PDF  Click here
2. ক্লাস 12 জাতীয়তাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ  Click here
3. পঞ্চম অধ্যায় : সমকালীন ভারতে নাগরিক.. PDF Click here



Regards
WB Semester Team 
📞 & 💬 9883566115

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.