WB Semester Display Ads-1

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

হলুদ পোড়া গল্পের প্রশ্ন উত্তর | হলুদ পোড়া গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF | Holud Pora Question Answer

0

'হলুদ পোড়া' গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF


ভূ(caps)মিকা : দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা পরীক্ষার জন্য দুটি গল্প পড়তে হবে। সেগুলি হল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'হলুদ পোঁড়া' এবং মহাশ্বেতা দেবীর লেখা 'হারুন সালেমের মাসি'। এই দুটি গল্প থেকে পরীক্ষায় 40 নম্বরের মধ্যে মোট 5 নম্বর আসবে। অর্থাৎ পরীক্ষায় এই দুটি গল্প থেকে 5 নম্বরের বড় প্রশ্ন দুটি থাকবে, যে-কোন একটি প্রশ্ন করতে হবে। প্রশ্নের মান 1+4 অথবা 2+3 অথবা 3+2 থাকতে পারে। 'হলুদ পোঁড়া' গল্প থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর সহ Free PDF নিচে দিলাম। তবে আমাদের সাজেশন ই-বইগুলি(PDF) কিনতে চাইলে মাত্র কয়েক টাকায় পাবেন।

হলুদ পোড়া গল্পের প্রশ্ন উত্তর

🔹 হলুদ পোড়া গল্পের প্রশ্ন উত্তর

[প্রতিটি প্রশ্নের মান ৫]
1. "...গাঁ-সুদ্ধ লোক যেন অপ্রস্তুত হয়ে রইল।" - গ্রামের লোকদের এই অপ্রস্তুত হওয়ার কারণ কি ছিল আলোচনা করো। 
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের বিংশ শতাব্দীর কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'হলুদ পোড়া' গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে।
গ্রামের লোকদের অপ্রস্তুত হওয়ার কারণ : এই গল্পে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি তিন দিনের ব্যবধানে গ্রামে দুটি খুন হয়। প্রথমে মধ্যবয়সী বলাই চক্রবর্তীর মৃতদেহ পাওয়া যায় গ্রামের দক্ষিণে ঘোষদের মজা পুকুরের পাশে এক মরা গজারি গাছের নিচে। লাঠির আঘাতে তার মাথা চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় খুন ছিল ষোলো-সতেরো বছরের রোগা ভীরু মেয়ে শুভ্রার। সন্ধ্যার সময় বাড়ির পিছনের ডোবার ঘাটে গলা টিপে মেরে কেউ তার দেহ ফেলে রেখে যায়। বলাই চক্রবর্তীর মৃত্যু গ্রামবাসীর কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল না, বরং অনেকেই তা চেয়েছিল। তবে শুভ্রার মৃত্যু নিয়ে হইচই কম হলেও গ্রামবাসীর কৌতূহল ও বিস্ময় ছিল অনেক। ঘরের সাধারণ মেয়ে শুভ্রা সবার চোখের সামনেই বড় হয়েছে। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিল, আর মাসখানেক আগে সন্তান জন্ম দিতে বাবার বাড়িতে এসেছিল। এমন একটি ঘরের সাধারণ মেয়ের এই পরিণতি গ্রামবাসীর কাছে ভাবনাতীত ছিল। তার মতো মেয়ের জীবনে এমন কিছু লুকানো থাকতে পারে, যা এত ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনবে, তা পাশের বাড়ির মেয়েও ভাবতে পারেনি। সেই কারণেই শুভ্রার মৃত্যুর ঘটনায় পুরো গ্রাম অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল।

2. 'হলুদ পোড়া' গল্পের কুঞ্জ ওঝা চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো। 
উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হলুদ পোড়া’ গল্পে কুঞ্জ ওঝা একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, যিনি নামকরা গুনিন হিসেবে গল্পে আবির্ভূত হয়েছে। তার চরিত্রর মধ্যে যেসব বৈশিষ্ট্য গুলি ফুটে উঠেছে সেগুলি হল-
(ক) নামকরা গুনিন : কুঞ্জ ওঝা গ্রামের একজন প্রসিদ্ধ গুনিন। তার গুণপনার খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই দামিনীর অসুখ হলে ডাক্তারের পরিবর্তে তাকে ডাকা হয়। অন্ধবিশ্বাসী গ্রামবাসীরা তার অলৌকিক ক্ষমতায় পূর্ণ বিশ্বাস রাখে।
(খ) ভয়ের স্রষ্টা : ‘হলুদ পোড়া’ সংস্কারবদ্ধ মানুষের জীবনচিত্র। লোকসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের প্রভাবে মানুষ কীভাবে প্রভাবিত হয়, এ গল্পে সেই প্রতিচ্ছবিই ফুটে উঠেছে। কুঞ্জ ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের প্রভাব বাড়ায়। “ভর সাঁঝে ভর করেছেন, সহজে ছাড়বেন না”—এই কথার মাধ্যমে সে জনতার মনে রহস্যময় আতঙ্ক ছড়ায় এবং বিশ্বাস আদায় করে নেয়।
(গ) কৌশলী ও অভিনয়প্রবণ : কুঞ্জ কৌশল প্রয়োগে অত্যন্ত পারদর্শী ছিল। দামিনীর চিকিৎসায় কুঞ্জ মন্ত্রপাঠ, আগুন, জল ছিটানো-সব মিলিয়ে নাটকীয় আয়োজন করে। এসব কৌশলেই সে গ্রামবাসীর চোখে শক্তিধর হয়ে ওঠে।
(ঘ) অন্তরে ভীরু : বাহ্যিক সাহসের আড়ালে কুঞ্জ ছিল ভীরু। ভীরুতার কারণেই সে কৈলাস ডাক্তারের যুক্তির মুখে তার ভণ্ডামি টিকতে পারে না।
(ঙ)  ধূর্ত সমাজজ্ঞ : কুঞ্জ সমাজ মানসিকতা বোঝে। তাই শুভ্রা ও বলাই চক্রবর্তীর অপমৃত্যু ঘিরে জনতার আলোচিত এতদিনের গুঞ্জনকেই সে দামিনী বা ধীরেনের মুখ দিয়ে উচ্চারণ করিয়ে গুজবকেই বাস্তব ভিত্তি দিতে চায়। কুঞ্জ সমাজের মানসিক দুর্বলতা জানে। তাই গুজবকে সত্যে পরিণত করে নিজের মর্যাদা রক্ষা করে। এইভাবেই সে গল্পে সমাজমনস্তত্ত্বের প্রতীক হয়ে ওঠে।
উপসংহার : ‘হলুদ পোড়া’ গল্পে কুঞ্জ ওঝা সমাজের অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও অজ্ঞতার প্রতিফলন। তার চরিত্রে গ্রামীণ মানসিকতার দুর্বলতা ও ভয়ের প্রভাব স্পষ্ট। যুক্তি ও বিজ্ঞানবোধের বিপরীতে সে অযৌক্তিক বিশ্বাসের প্রতিনিধি হিসেবে সমাজমনস্তত্ত্বকে সামনে আনে। এভাবেই কুঞ্জ ওঝা লেখকের সমাজচেতনার প্রকাশে প্রধান ভূমিকা পালন করে।  

3. "একমাত্র এই ভাবনা তাকে অন্যমনস্ক করে দেয়।" - কার কথা বলা হয়েছে? যে পরিপ্রেক্ষিতে তার এই মানসিক অবস্থা তা নিজের ভাষায় লেখো। ১+৪
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের বিংশ শতাব্দীর কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'হলুদ পোড়া' গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে।
এখানে ধীরেন চাটুয্যের কথা বলা হয়েছে।
যে পরিপ্রেক্ষিতে তার এই মানসিক : পঙ্কজ ঘোষাল বলেছিল, মরা মানুষ অর্থাৎ অশরীরীও মানুষের গলা টিপে মারতে পারে। কুঞ্জ গুনিন বলেছিল, শুভ্রাকে বলাই চক্রবর্তী মেরেছে, তবে সরাসরি নিজে নয়, কারণ মরার এক বছরের মধ্যে কেউ তা করতে পারে না। সেই সময়ের মধ্যে শ্রাদ্ধশান্তি না হলে তখনই সে সরাসরি মানুষের ক্ষতি করতে পারে। কুঞ্জর মতে, এক ব্যক্তিকে ভর করে বলাই চক্রবর্তী তার হাত দিয়েই শুভ্রাকে খুন করেছে। পরদিন সকালে এইসব কথা ঘুরে ঘুরে পৌঁছায় শুভ্রার দাদা ধীরেনের কানে এবং ধীরেনের মধ্যে তার প্রতিক্রিয়া হয়। অগ্রহায়ণের মিষ্টি রোদ চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। বর্ষার পর গাছপালা ও আগাছার জঙ্গলে জীবনের ছড়াছড়ি। বাড়ির পিছনের ডোবা ঘন সবুজ কচুরিপানায় ঢাকা। তালগাছের গুঁড়ির ঘাটে জল কমে অর্ধেক ভেসে উঠেছে। ধীরেন তালকাঠের ধাপ বানিয়েছিল শুভ্রার ওঠানামার সুবিধার জন্য, কারণ সে তখন সাত মাসের গর্ভবতী। পাড়ার লোকের ছড়ানো গুজব ধীরেনকে ক্ষুব্ধ করেনি বরং শুভ্রার খুনি কীভাবে ঘাটে এল তা ভেবে ধীরেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল।

4. ছোটোগল্প হিসেবে 'হলুদ পোড়া' গল্পটি কতদূর সার্থক তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।  [ WBCHSE Model Question]
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের বিংশ শতাব্দীর কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'হলুদ পোড়া' গল্প থেকে উত্ত প্রশ্নটি নেওয়া হয়েছে। আমি এখন নিচে 'হলুদ পোড়া' গল্পটি ছোটোগল্প হিসেবে কতদূর সার্থক তা নিজের ভাষায়  আলোচনা করছি -
এই ছোটোগল্পটি তার আয়তনে আপাতভাবে ছোটোগল্পের সংক্ষিপ্ততার শর্ত কিছুটা ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এর সূচনা ছোট গল্পের আকস্মিকতার সঙ্গে হয়েছে। "সে বছর কার্তিক মাসের মাঝামাঝি তিন দিন আগে পরে গাঁয়ে দু’দুটো খুন হয়ে গেল।” এই আকস্মিকতায় পাঠক প্রথমেই বিস্মিত হয়। কাহিনির শেষে থাকে একই রকম আকস্মিকতা। ধীরেন বলে, "আমি বলাই চক্রবর্তী! শুভ্রাকে আমি খুন করেছি।” ধীরেন চরিত্রের পূর্ব অভিজ্ঞতায় এ স্বীকারোক্তি প্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু পাঠক যখন এ নিয়ে ভাবতে থাকে তখনই কাহিনি শেষ হয়। অর্থাৎ পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ও ঘটনার জন্য উৎকণ্ঠা রেখে গল্পের সমাপ্তি ঘটে।
ছোটগল্পে সাধারণত চরিত্র সংখ্যা সীমিত থাকে। ‘হলুদ পোড়া’ গল্পেও এ প্রথা প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে প্রধান চরিত্র হলো ধীরেন, কুঞ্জ, এবং আংশিকভাবে নবীন, দামিনী ও কুঞ্জের স্ত্রী শান্তি। যদিও বিচ্ছিন্নভাবে আরও কিছু চরিত্র উপস্থিত আছে, তবু তাদের ভূমিকা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। তবে ‘হলুদ পোড়া’ গল্পের সবচেয়ে বড় স্বাতন্ত্র্য তার কাহিনির গঠন ও বিন্যাসে নিহিত। যেমনভাবে লেখক একটি আপাত ভৌতিক গল্পের কাঠামো নির্মাণ করেছেন এবং সম্ভব-অসম্ভবের সীমানা অতিক্রম করে দুটি চরিত্রকে অতিপ্রাকৃত রূপে রূপান্তরিত করেছেন, সেখানে স্পষ্টতই আপাত ভৌতিক কাঠামোর মধ্যেই সমাজমনস্তত্ত্বের গভীর প্রকাশ ঘটেছে। গ্রামের মানুষের আকাঙ্ক্ষা, তাদের প্রত্যাশা এবং কুসংস্কার ভিত্তিক সমাজের গঠন এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। বিজ্ঞানমনস্ক ধীরেনের অতিপ্রাকৃত রূপান্তর বা কৈলাস ডাক্তারের চেষ্টার পরও কুঞ্জ গুনির কাছে পরাজয়, সবমিলিয়ে একটি পূর্ণ সমাজের মানসিকতার প্রতিচ্ছবি। লেখক এখানে কোনো সরাসরি লোকশিক্ষা প্রদানের চেষ্টা করেননি; বরং তার লক্ষ্য ছিল সমাজমনস্তত্ত্বকে রূপ দেওয়া, এবং সেই কারণে ‘হলুদ পোড়া’ ছোটগল্প হিসেবে নিঃসন্দেহে সার্থক।

5. "...শুধু আছে তীব্র উত্তেজনা এবং কৌতূহল-ভরা পরম উপভোগ্য শিহরণ।"- লেখক এ কথা যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে  বলেছেন তা লেখ। 
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের বিংশ শতাব্দীর কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'হলুদ পোড়া' গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে।
অসুস্থ দামিনীকে সুস্থ করার উদ্দেশ্যে পঙ্কজ ঘোষালের পরামর্শে আনা হয় খ্যাতনামা গুনিন কুঞ্জকে। তার অলৌকিক গুণাবলি প্রত্যক্ষ করতে সেখানে জড়ো হয়েছিল অসংখ্য মানুষ। লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, অন্তত তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশজন নারী-পুরুষ ও প্রায় পাঁচটি লণ্ঠন সেই স্থানে উপস্থিত ছিল। উপস্থিতদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ছিল অল্প, এবং তরুণী মেয়েদের সেখানে আসতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। মন্ত্রমুগ্ধের মতো মানুষগুলি দাওয়ায় গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল। কুঞ্জ যখন দামিনীর অশরীরী তাড়াতে গিয়ে প্রায় নির্যাতনে পৌঁছায়, ধীরেন তীব্র আপত্তি জানায়। তবু জনতার রোমাঞ্চ উপভোগের বাসনা দমন করতে নবীনের পক্ষে সম্ভব হয়নি। দাওয়াটি যেন মঞ্চে পরিণত হয়। সেখানে অজানার রহস্যকে সহজ নাটকের রূপে দেখানো হচ্ছিল। কুঞ্জ যেন এনেছে ‘জীবনের শেষ সীমার ওপারের ম্যাজিক’। দামিনীর অশরীরী উপস্থিতি তখন সকলের কাছে বাস্তব মনে হয়। উপস্থিত দর্শকদের মনে ভয়ের বদলে জাগে 'তীব্র উত্তেজনা এবং কৌতূহল-ভরা পরম উপভোগ্য শিহরণ'।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
আমাদের প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণীর চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুকগুলি (PDF) সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইটের Menu অপশনে ক্লিক করুন। নতুন সিলেবাসের প্রতিটি অধ্যায় থেকে এই সাজেশন ই-বুক(PDF)গুলিতে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে প্রশ্ন উত্তরগুলি উপস্থাপন করা হয়েছে।
File Details :
PDF Name : 'হলুদ পোড়া' গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF
Size : 1 MB
No. of Pages : 2
Download Link : Click here To Download

আরো পড়ুন প্রশ্নোত্তর
1. 'কেন এল না' কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF  Click here
2. ডাকঘর নাটকের প্রশ্ন উত্তর PDF Click here
3. দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিষ্টার প্রবন্ধ রচনা PDF Click here
4. হারুন সালেমের মাসি গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF Click here



Thanks,
WB Semester Team 
📞 & 💬 9883566115

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.