ক্লাস-12 বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস PDF
🔹 দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিষ্টার বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস PDF
1. বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান সম্পর্কে আলোচনা করো।
অথবা,
চিত্রকলাচর্চায় শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর স্থান নিরূপণ করো।
উত্তর : নন্দলাল বসু ছিলেন আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার একজন প্রখ্যাত পথিকৃৎ। তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে দেশীয় ও ঐতিহ্যবাহী চিত্রকলার বিকাশ সাধন করেন। তিনি তাঁর চিত্রে ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী, গ্রাম্য জীবন ও প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তোলেন এবং ভারতীয় সংবিধানের সচিত্র সংস্করণ অলঙ্কৃত করেন, যা তাঁর শিল্পকলার গভীরতা ও প্রতিভার সোনালী প্রমাণ। আমি এখন নিচে চিত্রকলার ইতিহাসে তাঁর অবদান সম্পর্কে আলোচনা করছে।
বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান :
(ক) ভারতীয় শিল্পশৈলীর পুনর্জাগরণ ঘটান : নন্দলাল বসু পাশ্চাত্য প্রভাব থেকে ভারতীয় শিল্পকলাকে মুক্ত করে দেশীয় ঐতিহ্য, পৌরাণিক ভাবনা ও লোকশিল্পের ধারা পুনরুজ্জীবিত করেন। শান্তিনিকেতনের কলাভবনের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি ভারতীয় শৈলীতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেন। উদাহরণ : তাঁর ‘সতী’ 'শিবসতী', 'কর্ণ' ও ‘পার্থসারথি’ চিত্রে দেখা যায় প্রাচীন পৌরাণিক ভাবনা ও দেশীয় রঙের ব্যবহার।
(খ) শিল্পশিক্ষায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনেন : তিনি শিল্পশিক্ষায় শুধু অনুকরণ নয়, পর্যবেক্ষণ ও চিন্তার গুরুত্ব শেখাতেন। তাঁর মতে, প্রকৃতি থেকেই শিল্পের শিক্ষা নেওয়া উচিত। উদাহরণ : শান্তিনিকেতনে তিনি প্রথম ‘নেচার স্টাডি’ বা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণমূলক পাঠ চালু করেন, যেখানে ছাত্ররা মাঠে বসে গাছপালা, মানুষ ও প্রাণী এঁকে শেখার সুযোগ পেত।
(গ) প্রকৃতি ও মানুষের জীবনের সংযোগ স্থাপন করেন : নন্দলাল নিজের চারপাশের বাস্তব জীবনকে শিল্পে তুলে ধরেন। তাঁর ছবিতে দেখা যায় গ্রামীণ প্রান্তর, সাধারণ মানুষ ও প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক। উদাহরণ : ‘রাঙামাটির পথ’ বা ‘হলকর্ষণ’ ছবিতে গ্রামীণ জীবনের স্বাভাবিক দৃশ্য যেমন হাটযাত্রী, মোষ, গোরুর গাড়ি ইত্যাদি বাস্তবভাবে ফুটে উঠেছে।
(ঘ) দেশপ্রেম ও জাতীয় ভাব প্রকাশ করেন : নন্দলাল বসুর শিল্পে স্বদেশি ভাবনা গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের চেতনা নিজের শিল্পে ধারণ করেছিলেন। উদাহরণ : ১৯৩০ সালে ডান্ডি অভিযানের পর তিনি গান্ধীজির একটি প্রতিকৃতি আঁকেন যেখানে গান্ধীজি লাঠি হাতে চলেছেন-এই ছবি অহিংস আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়।
(ঙ) আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার ভিত্তি স্থাপন করেন : তিনি ছিলেন শুধু একজন শিল্পী নয়, একজন শিল্পগুরুও। তাঁর শিক্ষা ও দর্শন পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের নতুন দিশা দেয়। উদাহরণ : নন্দলাল বসুর ছাত্রদের মধ্যে বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় ও রামকিঙ্কর বেইজ পরবর্তীতে ভারতীয় আধুনিক শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে ওঠেন।
উপসংহার : নন্দলাল বসু ভারতীয় চিত্রকলায় ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সেতুবন্ধন ঘটিয়ে শিল্পের নবযুগের সূচনা করেছিলেন। সুতরাং বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে তার অবদান অবিস্মরণীয়।
2. বাঙালির চিত্রকলাচর্চার ধারায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার জনক এবং বাংলা শিল্পজাগরণের পথপ্রদর্শক। তিনি ভারতীয় ঐতিহ্য, আধ্যাত্মিকতা ও জাতীয় ভাবধারাকে চিত্রকলার মাধ্যমে বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছিলেন। আমি এখন নিচে তাঁর অবদান সম্পর্কে আলোচনা করছে-
চিত্রকলাচর্চার ধারায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান :
(ক) ভারতীয় শৈলীর পুনরুজ্জীবন : তিনি পাশ্চাত্য প্রভাব থেকে সরে এসে ভারতীয় ঐতিহ্য, আধ্যাত্মিকতা ও ভাবধারাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে শিল্পকলার মূল উৎস জাতীয় সংস্কৃতির ভেতরে নিহিত। তাঁর ‘বজ্রমুকুট’, ‘ঋতুসংহার’, ‘সুজাতা’, ‘কৃষ্ণলীলা’ প্রভৃতি চিত্রে ভারতীয় রীতি এবং দেবত্ববোধের প্রকাশ দেখা যায়।
(খ) ওরিয়েন্টাল আর্ট আন্দোলনের প্রবর্তক : ১৯০৭ সালে তিনি ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ ওরিয়েন্টাল আর্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন, যার লক্ষ্য ছিল প্রাচ্য শিল্পকলার পুনরুজ্জীবন এবং জনগণের মধ্যে তার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা। এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় চিত্রকলাকে জাতীয় মর্যাদা ও আত্মপরিচয় এনে দেন।
(গ) শিক্ষক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে ভূমিকা : কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অফ আর্ট-এর উপাধ্যক্ষ এবং পরে ‘বিচিত্রা ভবন’-এর শিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্রদের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও দেশীয় শিল্পের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলেন। তিনি ছাত্রদের শেখাতেন কীভাবে ভারতীয় পুরাণ, প্রকৃতি ও ধর্মীয় ভাবধারাকে চিত্রকলায় প্রকাশ করতে হয়। তাঁর ছাত্র নন্দলাল বসু, অসিতকুমার হালদার পরবর্তীকালে ভারতীয় চিত্রকলার নবযুগের নেতৃত্ব দেন। উদাহরণস্বরূপ, নন্দলাল বসুর ‘ভারতমাতা’ চিত্রটি অবনীন্দ্রনাথেরই শিল্পদর্শনের প্রভাব বহন করে।
(ঘ) আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রদর্শনী : তাঁর চিত্রকর্ম শুধু ভারতে নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও প্রশংসিত হয়েছিল। তাঁর চিত্র লন্ডন, প্যারিস ও জাপানে প্রদর্শিত হয়, যা ভারতীয় শিল্পের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। তাঁর আঁকা বিখ্যাত কিছু ছবির নাম- সাহাজাদপুর দৃশ্যাবলি, কবিকঙ্কন চণ্ডি, প্রত্যাবর্তন, সাজাহান প্রভৃতি।
(ঙ) সৃজনশীল নতুন ধারা : তিনি জীবনের শেষ পর্যায়ে চিত্রকলায় এক অভিনব সৃজনশীল ধারা সৃষ্টি করেন -‘কুটুম-কাটাম’। শেষ জীবনে তাঁর সৃষ্ট ‘কুটুম-কাটাম’ সিরিজ ভারতীয় বিমূর্ত শিল্পের সূচনা ঘটায়, যা তাঁর উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় বহন করে।
উপসংহার : তিনি ভারতীয় চিত্রকলায় স্বকীয়তার আলো জ্বেলে দেশীয় শিল্পের নবযুগের সূচনা করেছিলেন; তাঁর সাধনায় ভারতীয় শিল্প বিশ্বমঞ্চে গৌরব অর্জন করে। সুতরাং বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে তার অবদান অবিস্মরণীয়।
3. বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান আলোচনা করো।
অথবা,
বঙ্গদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর : রামকিঙ্কর বেইজ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে এক অনন্য স্থান অধিকার করেন। ভাস্কর ও চিত্রকর হিসেবে তাঁর কাজ শুধু শিল্প নয়, বরং সমাজের সাধারণ মানুষের জীবন ও সংস্কৃতিকে শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি এখন নিচে বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে তার অবদান সম্পর্কে আলোচনা করছে।
বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান :
(ক) ভাস্কর্য ও চিত্রকলায় বৈচিত্র্য : তাঁর শুধু ভাস্কর নয়, তেল ও জলরঙে চিত্রশিল্পেও দক্ষ ছিলেন। তাঁর কাজগুলি প্রধানত প্রকৃতি ও গ্রামের জীবনকে প্রতিফলিত করে। ‘শরৎকাল’, ‘নতুন শস্য’, ও ‘বিনোদিনী’-এর মতো প্রকৃতিকেন্দ্রিক ছবি এঁকে শিল্পে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেন।
(খ) সাধারণ মানুষের জীবন উদযাপন : তাঁর ভাস্কর্য ও চিত্রকর্মে গ্রামীণ জনজীবন, হাট-বাজার, সাঁওতাল দম্পতি ও কৃষিজীবনের স্বতন্ত্র রূপ ফুটে উঠেছে, যা সমাজের বাস্তবতার এক শিল্পী প্রতিফলন। ‘হাটের সাঁওতাল পরিবার’, ‘কাজের শেষে সাঁওতাল রমণী’ এমন উদাহরণ।
(গ) খোলা স্থানে বিশাল ভাস্কর্য নির্মাণ : সিমেন্ট ও কাঁকর-মাটি মিশিয়ে তিনি ‘উৎসবী চোখ’, ‘শিলং সিরিজ’ ইত্যাদি বিশালাকৃতি ভাস্কর্য সৃষ্টি করেন, যা শিল্প ও জনসাধারণের মেলবন্ধনকে শক্তিশালী করেছে।
(ঘ) শিক্ষকতা ও শিল্পচর্চা : শান্তিনিকেতনে শিক্ষক হিসেবে তিনি ভাস্কর্য বিভাগের উন্নয়ন করেছেন। ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করে চিত্রশিল্প ও ভাস্কর্যের নতুন ধারায় অবদান রেখেছেন। ‘সুজাতা’ ও ‘গ্রীষ্মের দুপুর’-এর মতো কাজ দিয়ে ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করেছেন।
(ঙ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি : তাঁর শিল্পকর্ম ভারতের প্রধান সংগ্রহশালায় প্রদর্শিত হয়েছে। পদ্মভূষণ, দেশিকোত্তম ও এমেরিটাস প্রোফেসারের সম্মাননা তাঁর শিল্পে অতুলনীয় মর্যাদা যোগ করেছে।
উপসংহার : রামকিঙ্কর বেইজ কেবল একজন শিল্পী নন, তিনি বাংলার চিত্রকলার জীবন্ত ইতিহাস। তাঁর ভাস্কর্য ও চিত্রকর্ম গ্রামীণ সংস্কৃতি, মানবতার প্রকাশ ও শিল্পচর্চার এক অনন্য দিশারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সুতরাং বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে তার অবদান অবিস্মরণীয়।
4. বাঙালির চিত্রকলা চর্চার ধারায় যামিনী রায়ের ভূমিকা কতখানি আলোচনা করো।
উত্তর : যামিনী রায় বাঙালির চিত্রকলার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেন। তাঁর কাজ শুধুই শিল্প নয়, বরং বাংলার লোকজ সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও মানবজীবনের এক অনবদ্য চিত্রায়ন। আমি এখন নিচে বাঙালির চিত্রকলা চর্চার ধারায় তাঁর অবদান সম্পর্কে আলোচনা করছে-
বাঙালির চিত্রকলা চর্চার ধারায় যামিনী রায়ের ভূমিকা :
(ক) বাংলার লোকজ চিত্রকলায় নতুন মাত্রা : তিনি গ্রামীণ জীবন ও বাংলার লোকশিল্পকে চিত্রকলায় নতুনভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর শিল্পচর্চা বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আধুনিক কলার মাধুর্যে উপস্থাপন করে।
(খ) স্বতন্ত্র চিত্রভাষার নির্মাণ : ফরাসি ইমপ্রেশনিস্ট ও কালীঘাট পটচিত্রের প্রভাব মেলিয়ে তিনি নিজের একটি স্বতন্ত্র চিত্রভাষা তৈরি করেন, যা বাংলা চিত্রকলায় নতুন ধারার সূচনা করে এবং শিল্পের বহুমাত্রিকতা বৃদ্ধি করে।
(গ) শিক্ষাগত ও শিল্পচর্চার প্রসার : গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে দীর্ঘ অধ্যয়ন ও অনুশীলনের মাধ্যমে যামিনী রায় শিল্পচর্চায় নতুন ধারণা ও পদ্ধতি উপস্থাপন করেন এবং ভবিষ্যতের শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করেন।
(ঘ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি : তাঁর শিল্পচর্চায় অসামান্য অবদানের কারণে তাঁকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । ১৯৩৪ সালে ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক ও ১৯৫৫ সালে পদ্মভূষণ উপাধি তাঁকে শিল্পী হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা দিয়েছে।
(ঙ) প্রকৃতি ও মানবজীবনের সংমিশ্রণ : তাঁর চিত্রকর্মে প্রকৃতি ও মানবজীবনের অন্তর্নিহিত সম্পর্ক প্রতিফলিত হয়। তাঁর কাজ বাংলার চিত্রকলায় গভীর অর্থ ও সৌন্দর্য প্রদান করে।
উপসংহার : যামিনী রায় শুধু একজন শিল্পী নন, তিনি বাংলার চিত্রকলার এক পথপ্রদর্শক। তাঁর কাজ বাংলার চিত্রশিল্পে নতুন দিশা ও শিল্পচর্চায় এক অনবদ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। সুতরাং বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে তার অবদান অবিস্মরণীয়।
5. বাঙালির চিত্রকলাচর্চার ধারায় চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেন। তিনি শুধু চিত্রশিল্পী নন, বরং ব্যঙ্গচিত্র ও শিল্পচর্চায় এক নতুন ধারার পথপ্রদর্শক ছিলেন। আমি এখন নিচে চিত্রকলাচর্চার ধারায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করছে -
বাঙালির চিত্রকলাচর্চার ধারায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান :
(ক) জাপানি ও ফরাসি চিত্রপ্রভাবের সংমিশ্রণ : গগনেন্দ্রনাথ জাপানি কালি-তুলি ও ওয়াশ শৈলী বাংলার চিত্রকলায় প্রবর্তন করেন। ‘টুয়েলভ ইঙ্ক স্কেচেস’ তার এই শৈলীর সুপরিচিত উদাহরণ।
(খ) ব্যঙ্গচিত্রে অগ্রগণ্য অবদান : ‘ভোঁদড় বাহাদুর’, ‘বিরূপ বজ্র’, ‘নবহুল্লোড়’-এর মতো ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্রকলায় নতুন দিশা সৃষ্টি করেন।
(গ) মঞ্চসজ্জা ও সাহিত্যচর্চায় অবদান : মঞ্চসজ্জা ও দৃশ্যপটের ক্ষেত্রে তিনি নবীনতার সূচনা করেন। ‘Realm of the Absurd’ ও ‘Reform Screams’ গ্রন্থে তার ব্যঙ্গচিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
(ঘ) শিক্ষাগত ও সাংগঠনিক ভূমিকা : ১৯০৭ সালে ‘Indian Society for Oriental Art’-এর সম্পাদক ও ১৯১৬ সালে ‘Bengal Home Industries Association’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চিত্রকলায় শিক্ষাগত ও সাংগঠনিক প্রভাব বিস্তার করেন।
(ঙ) আধুনিক চিত্রকলায় পথপ্রদর্শক : তাঁর ছবি ও ব্যঙ্গচিত্র বাংলা চিত্রকলাকে নতুন দিশা দিয়েছে, যেখানে বাস্তবধর্মী শৈলী ও সামাজিক বার্তা একসাথে প্রকাশ পায়। বাস্তবধর্মী শৈলী ও সামাজিক বার্তার সংমিশ্রণে তিনি চিত্রকলাকে সমৃদ্ধ করেছেন।
উপসংহার : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা চিত্রকলার এক অগ্রদূত ছিলেন। তাঁর ব্যঙ্গচিত্র, মঞ্চসজ্জা ও শিল্পচর্চা বাংলা চিত্রকলাকে এক অনন্য দিশা দিয়েছে, যা আজও স্মরণীয়। সুতরাং বাঙালির চিত্রকলাচর্চার ধারায় চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান অনস্বীকার্য।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
আমাদের প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণীর চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুকগুলি (PDF) সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইটের Menu অপশনে ক্লিক করুন। নতুন সিলেবাসের প্রতিটি অধ্যায় থেকে এই সাজেশন ই-বুক(PDF)গুলিতে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে প্রশ্ন উত্তরগুলি উপস্থাপন করা হয়েছে।
File Details :
PDF Name : 'হলুদ পোড়া' গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF
Size : 1 MB
No. of Pages : 2
আরো পড়ুন | প্রশ্নোত্তর |
---|---|
1. 'কেন এল না' কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
2. ডাকঘর নাটকের প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
3. দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিষ্টার প্রবন্ধ রচনা PDF | Click here |
4. হলুদ পোড়া গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
WB Semester Team
📞 & 💬 9883566115