ক্লাস 12 ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় : সংবিধান প্রণয়ন : স্বাধীনোত্তর ভারতে নবযুগের সূচনা
🔹 দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের মান : 3/4]1. গণপরিষদ গঠনের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
উত্তর : ভূমিকা : আজকের পৃথিবীতে সব গণতান্ত্রিক দেশই সংবিধান অনুযায়ী চলে। এই সংবিধান তৈরি করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একটি দল, যাকে ‘গণপরিষদ’ বা ‘সংবিধান সভা’ বলা হয়।
গণপরিষদ গঠনের প্রেক্ষাপট :
1. স্বরাজ’ প্রস্তাব ও গণপরিষদের ধারণা : ১৯০৬ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ‘স্বরাজ’-এর প্রস্তাব নেয়, যার মধ্যেই গণপরিষদ গঠনের ভাবনা ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিভিন্ন দেশের মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার চায়, ফলে ভারতে গণপরিষদ গঠনের দাবি জোরালো হয়।
2. গান্ধিজির মতামত : গান্ধিজি ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ পত্রিকায় গণপরিষদ গঠনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন। তাঁর মতে, স্বরাজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উপহার নয়, এটি ভারতের জনগণের আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে।
3. ১৯২৩ সালে গণপরিষদের দাবি : ১৯২৩ সালে স্বরাজ্য দল একটি জাতীয় সম্মেলন করে। সেখানে সব শ্রেণির প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি গণপরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
4. ১৯৩৩ সালে শ্বেতপত্র প্রকাশ : ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ সরকার এক ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করে, যেখানে কেন্দ্রে দ্বৈতশাসন ও প্রদেশে দায়িত্বশীল শাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু কংগ্রেস এই প্রস্তাব মানেনি। পরে, ১৯৩৪ সালে কংগ্রেস দাবি করে যে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে নির্বাচিত গণপরিষদই ভারতের সংবিধান তৈরি করবে।
5. কংগ্রেসের ফৈজপুর অধিবেশনের প্রস্তাব : ১৯৩৫ সালে কংগ্রেসের ফৈজপুর অধিবেশনে প্রস্তাব নেওয়া হয় যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে গণপরিষদ গঠন করতে হবে।
6. আগস্ট ঘোষণা : ১৯৪০ সালের 'আগস্ট ঘোষণা'য় বড়োলাট লিনলিথগো স্বীকার করেন যে, ভারতের সংবিধান রচনা সম্পূর্ণরূপে ভারতীয়দের নিজেদের বিষয়।
7. ক্রিপস মিশনের প্রস্তাব : ১৯৪২ সালে চার্চিল ভারতে ক্রিপস মিশন পাঠান। এতে বলা হয়, যুদ্ধ শেষে প্রাদেশিক আইনসভার নিম্নকক্ষের সদস্যগণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গণপরিষদ গঠিত হবে।
8. কুপল্যান্ড প্রস্তাব : ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ প্রতিনিধি কুপল্যান্ড ভারতে এসে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি গণপরিষদ গঠনের প্রস্তাব দেন, কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো তা মানেনি।
9. বিশ্বযুদ্ধোত্তর ব্রিটেন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেনের অর্থনীতি দুর্বল হয়। ১৯৪৫ সালে শ্রমিক দল ক্ষমতায় এসে ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গণপরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
মূল্যায়ন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের সংবিধান রচনার উদ্যোগ শুরু হয়। ১৯৪৬ সালে মন্ত্রী মিশন প্রস্তাব দেয় ৩৮৯ সদস্যের গণপরিষদ গঠনের। একই বছরের জুলাইয়ে এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এভাবেই ভারতের গণপরিষদ গঠিত হয়।
2. ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর : ভূমিকা : সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি। প্রতিটি দেশের সংবিধানে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে, যা শাসনব্যবস্থা বোঝায়। ভারতের সংবিধানও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে অন্যান্য দেশের সংবিধান থেকে আলাদা।
ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্য :
1. বৃহত্তম লিখিত সংবিধান : ভারতের সংবিধান বিশ্বের সবচেয়ে বড় লিখিত সংবিধান। প্রবর্তনের সময় এতে ৫টি ধারা ও ৮টি তফশিল ছিল। পরে এটি বারবার সংশোধন হয়েছে। এতে কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতা, শাসনকাঠামো, মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য ইত্যাদি বিষয়ের উল্লেখ আছে।।
2. যুক্তরাষ্ট্রীয় ও এককেন্দ্রিক সমন্বয় : ভারতীয় সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় ও এককেন্দ্রিক শাসনের মিশ্রণ। কেন্দ্র ও অঙ্গরাজ্যের ক্ষমতা তিনটি তালিকায় বণ্টিত । এগুলি হল-কেন্দ্রীয়, রাজ্য, ও যুগ্ম তালিকা। কেন্দ্র অধিক শক্তিশালী হওয়ায় শাসনব্যবস্থা কেন্দ্রাভিমুখী।
3. দুষ্পরিবর্তনীয় ও নমনীয় : ভারতীয় সংবিধান কিছু বিষয়ে কঠিনভাবে পরিবর্তন হয়, আবার কিছু বিষয়ে পরিবর্তন সহজ। এতে মার্কিন সংবিধানের কঠিনতা ও ব্রিটিশ সংবিধানের নমনীয়তার মিশ্রণ আছে।
4. ধর্মনিরপেক্ষ নীতি : ভারতীয় সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ। কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি নেই। সব নাগরিকই ধর্ম পালন ও প্রচারের স্বাধীনতা পায়।
5. মৌলিক অধিকার : ভারতীয় সংবিধান নাগরিকদের বিভিন্ন মৌলিক অধিকার দেয়, যেমন: সাম্য, স্বাধীনতা, শোষণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, সম্পত্তি (১৯৭৮ সালে বাতিল) এবং শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধান।
6. সর্বজনীন ভোটাধিকারের নীতি : সংবিধান ১৮ বছরের ওপর সব নাগরিককে ভোটাধিকারের স্বীকৃতি দেয়, জাতি, লিঙ্গ বা ধনসম্পদের ভেদ ছাড়াই।
7. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : ভারতের সংবিধান বিচার বিভাগকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রাখে। বিচারপতি নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি নিয়ে বিচার বিভাগের বিশেষ অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
8. একনাগরিকত্ব ও জাতীয় একতা : ভারতীয় সংবিধান সব নাগরিককে একনাগরিকত্ব দেয়। যে কোনো রাজ্যে বসবাস করলেও সবাই ভারতের নাগরিক। এতে জাতীয় একতা বজায় থাকে।
উপসংহার : ভারতের সংবিধান বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য অন্য দেশের সংবিধান থেকে আলাদা এবং দেশের শাসন ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে।
3. ভারতীয় শাসনতন্ত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার তত্ত্ব কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে? [HS Model Question]
উত্তর : ভূমিকা : ভারতের জাতীয় আন্দোলনে ধর্মনিরপেক্ষতার গুরুত্ব ছিল। তাই স্বাধীন ভারতের সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত।
ধর্মনিরপেক্ষতার তত্ত্ব :
1. ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ : ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় দেশকে ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দুটি ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংশোধনের মাধ্যমে যুক্ত হয়।
2. ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ : ভারতে কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি নেই। জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে ভারত রাষ্ট্রে সকল নাগরিক ধর্মাচরণ ও ধর্মপ্রচারের স্বাধীনতা পায়। রাষ্ট্র ও নাগরিকের সম্পর্ক ধর্মনিরপেক্ষ, ধর্মীয় রাজনীতি বা ভেদাভেদ রাষ্ট্রের কাজে প্রভাব ফেলে না।
3. ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার : ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক অধিকারগুলো ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে গঠিত। কোনো ধর্ম বা সম্প্রদায়ের স্বার্থে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা নেই। সংবিধানের ২৫–২৮ ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারকে ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষাকবচ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
মূল্যায়ন : ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। প্রাচীন কাল থেকে বহু ধর্ম, জাতি ও ভাষার মানুষ এই দেশে বসবাস করেছে। তাই সংবিধানও বহুত্ববাদী ভারতের ঐতিহ্য বজায় রেখে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। এখানে সব ধর্মাবলম্বী মানুষ একত্রে বসবাস করতে পারে এবং স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম পালন ও চর্চার অধিকার ভোগ করে।
4. ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে ?
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে (১২ থেকে ৩৫নং ধারা) নাগরিকদের জন্য ছয়টি মৌলিক অধিকার লিপিবদ্ধ আছে। মূল সংবিধানে সাতটি অধিকার ছিল, তবে ১৯৭৮ সালে ৪৪তম সংশোধনের মাধ্যমে ‘সম্পত্তির অধিকার’ বাদ দেওয়ায় বর্তমানে ছয়টি মৌলিক অধিকারই স্বীকৃত।
ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকার :
1. লক্ষ্য : ভারতের সংবিধানে মৌলিক অধিকারের লক্ষ্য হলো নাগরিকের জীবন ও ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিকাশে কোনো বাধা না পড়ে, তা রক্ষার জন্য সংবিধান এই অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।
2. মৌলিক অধিকারসমূহ : ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত ছয়টি মৌলিক অধিকার হল- [ক] সাম্যের অধিকার, [খ] স্বাধীনতার অধিকার, [গ] শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, [ঘ] ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, [ঙ] সংস্কৃতি ও শিক্ষা সম্পর্কিত অধিকার, ও [চ] শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার।
এই অধিকারগুলি নাগরিকের জীবন ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়ক।
[ক] সাম্যের অধিকার : ভারতের সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায় (১৪ থেকে ১৮নং ধারা) আইনের চোখে সমান অধিকার নিশ্চিত করে। এতে সরকারি চাকরি, বৈষম্য বিরোধী নীতি এবং অস্পৃশ্যতা নিবারণের বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত।
[খ] স্বাধীনতার অধিকার : ভারতের সংবিধানের ১৯-২২নং ধারা অনুযায়ী নাগরিকদের বাক্ ও মত প্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমবেত হওয়া, স্বাধীনভাবে বসবাস ও পেশা গ্রহণ, সভা-সমিতি গঠনের অধিকার নিশ্চিত। তবে রাষ্ট্র বিশেষ প্রয়োজনে এই অধিকারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে।
[গ] শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার : ভারতের সংবিধানের ২৩ ও ২৪নং ধারা নাগরিকদের শোষণ থেকে রক্ষা করে। এতে ক্রয়-বিক্রয়, শিশুশ্রম, বেগার খাটানো ও জবরদস্তি শ্রমকে আইনত দণ্ডনীয় ঘোষণা করা হয়েছে।
[ঘ] ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার : সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে ২৫-২৮নং ধারা অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন ও আচরণ করতে পারবে, এবং রাষ্ট্র কোনো ধর্মকে জোর করে চাপাবে না।
[ঙ] শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক অধিকার : ভারতীয় সংবিধানের ২৯ ও ৩০নং ধারা অনুযায়ী নাগরিকরা শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিষয়ে স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে।
[চ] শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার : সংবিধানের ৩২ এবং ২২৬নং ধারায় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের ব্যবস্থা প্রদান করে।
মূল্যায়ন : ভারতের সংবিধানের ছয়টি মৌলিক অধিকার নাগরিকদের জীবন, স্বাধীনতা ও সমানাধিকার নিশ্চিত করে। এগুলো গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি এবং নাগরিকদের ধর্মনিরপেক্ষতা, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সংবিধানিক সুরক্ষা প্রদান করে।
5. ভারতীয় সংবিধানের 'প্রস্তাবনা' সম্পর্কে লেখো।
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমানে বিভিন্ন দেশের লিখিত সংবিধানে একটি প্রস্তাবনা যুক্ত থাকে। প্রস্তাবনা হলো সংবিধানের মুখবন্ধ বা ভূমিকা। এতে সংবিধানের মূল আদর্শ, উদ্দেশ্য ও নীতির কথা বলা হয়। মার্কিন সংবিধানের আদর্শে ভারতীয় সংবিধানেও একটি প্রস্তাবনা যোগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ৪২তম সংশোধনের মাধ্যমে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দুটি এতে যুক্ত হয়।
ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা :
1. সার্বভৌম : ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনা দেশটির শাসনব্যবস্থা ও গঠনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। ভারত ‘সার্বভৌম’ রাষ্ট্র, কারণ দেশটি নিজের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা বিদেশি শক্তির অধীনে নয়।
2. সমাজতান্ত্রিক : ভারত একটি ‘সমাজতান্ত্রিক’ রাষ্ট্র, কারণ এখানে গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। ব্যাংক ও বিমা জাতীয়করণ এবং রাজন্যভাতা বিলোপের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশে মিশ্র অর্থনীতি চালু আছে।
3. গণতান্ত্রিক : ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সকল প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক ভোট দিয়ে প্রতিনিধিকে নির্বাচন করেন, আর সেই প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই শাসনব্যবস্থা চলে। ভারতের মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
4. ধর্মনিরপেক্ষ : ভারতের সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল ধর্মনিরপেক্ষতা। এখানে কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম করা হয়নি। সকল নাগরিক ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মাচারে স্বাধীন। রাষ্ট্র কোনো ধর্ম জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না এবং ধর্মের বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকে।
5. সাধারণতন্ত্র : ‘সাধারণতন্ত্র’ মানে ভারতে রাজা বা রানির শাসন নেই। দেশের সর্বোচ্চ পদে আছেন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, যিনি বংশানুক্রমে নয়, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। প্রতি পাঁচ বছরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়। তাই ভারত একটি প্রজাতান্ত্রিক বা সাধারণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।
মূল্যায়ন : সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও সাধারণতান্ত্রিক’ রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে। এতে নাগরিকদের ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় : 'সংবিধান প্রণয়ন : স্বাধীনোত্তর ভারতে নবযুগের সূচনা' এই অধ্যায় থেকে আমাদের সাজেশন E-Book(PDF)গুলিতে আরো অনেকগুলি 3 নম্বর মানের, 4 নম্বর মানের খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আছে। সেগুলি পেতে হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন অথবা উপরের Menu Option ক্লিক করে দেখতে পারেন।
File Details :
PDF Name : ক্লাস 12 সংবিধান প্রণয়ন প্রশ্ন উত্তর PDF
Size : 1 MB
| আরো পড়ুন | প্রশ্নোত্তর |
|---|---|
| 1. ক্লাস 12 বিদ্রোহ এবং ব্রিটিশরাজ PDF | Click here |
| 2. ক্লাস 12 শিক্ষাবিজ্ঞান শিখন এবং শিখন কৌশল | Click here |
| 3. ক্লাস 12 জাতীয়তাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ PDF | Click here |
WB Semester Team
📞 & 💬 9883566115
