Unit : 1 ‘শিখন এবং শিখন কৌশল’ এই ইউনিটটি মোট তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায় হল শিখন, দ্বিতীয় অধ্যায় শিখন কৌশল, এবং তৃতীয় অধ্যায় বুদ্ধি, সৃজনশীলতা ও ব্যক্তিত্ব। এই পর্বে আমরা প্রথম অধ্যায় ‘শিখন’ থেকে ১০ নম্বরের কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে একটি PDF নিচে দিয়েছি, যা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে। এছাড়া, আমাদের প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুক (PDF) গুলিতে শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ের সম্পূর্ণ সিলেবাস অত্যন্ত সুন্দর ও সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই ই-বুকগুলি বোর্ডের নতুন প্রশ্নপত্রের নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়েছে। ই-বুকগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা এই ওয়েবসাইটের Menu Option-এ ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন।
🔹 ক্লাস 12 শিক্ষাবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় শিখন প্রশ্ন ও উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের মান 10]
1. পরিণমন কাকে বলে ? পরিণমনের বৈশিষ্ট্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর : পরিণমন বলতে মানুষের ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠার স্বাভাবিক জৈব প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এতে শুধু শরীরের বৃদ্ধি নয়, মানুষের বুদ্ধি, অনুভূতি ও আচরণেও পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তন বয়সের সঙ্গে নিজে থেকেই হয়, এর জন্য আলাদা করে শেখা বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। মানুষের জন্মগত ক্ষমতা ও অভ্যন্তরীণ জৈবিক উপাদানের প্রভাবে এই বিকাশ ঘটে। তাই বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে যে বিকাশ ও আচরণগত পরিবর্তন হয়, তাকেই পরিণমন বলে।
J. A Mogeoch এর মতে পরিণমন মানে বয়সের সঙ্গে আচরণের পরিবর্তন যা পূর্ব অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার বদলে মূলত জৈবিক উপাদানসমূহের ওপর নির্ভরশীল।
পরিণমনের বৈশিষ্ট্য :
(১) বিকাশমূলক প্রক্রিয়া : পরিণমন হল শিশুর ধীরে ধীরে বিকাশের প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে শিশুর আচরণ, ক্ষমতা ও দক্ষতা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়। যেমন: শিশু প্রথমে হামাগুড়ি দেয়, পরে উঠে বসা শিখে, তারপর দাঁড়াতে ও হেঁটে চলতে পারে।
(২) সর্বজনীন প্রক্রিয়া : পরিণমন সকল শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম ঘটে। দেশ বা সংস্কৃতির পার্থক্য থাকলেও শিশুদের বিকাশের ধাপ সাধারণত একরকম থাকে।
(৩) নির্দিষ্ট বয়সসীমা : পরিণমন একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত ঘটে। শিশু যখন একটি নির্দিষ্ট বিকাশ পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন এই প্রক্রিয়ার কাজ প্রাকৃতিকভাবে থেমে যায়।
(৪) জৈবিক প্রক্রিয়া : পরিণমন প্রধানত শিশুর দেহ ও মনের অভ্যন্তরীণ জৈবিক উপাদানের ওপর নির্ভর করে। যদি কোনো জৈবিক বিকাশে সমস্যা থাকে, তবে আচরণগত পরিবর্তনও প্রভাবিত হতে পারে।
(৫) অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া : পরিণমন সম্পূর্ণরূপে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ শক্তি ও ক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এটি বাহ্যিক পরিবেশ, প্রশিক্ষণ বা অন্য কোনো কার্যের ওপর নির্ভর করে না।
(৬) স্বাভাবিক ও চাহিদানির্ভর নয় : এই প্রক্রিয়া শিশু বা ব্যক্তির ইচ্ছা বা চাহিদার ওপর নির্ভর করে না। এটি স্বাভাবিকভাবেই ঘটে, যদিও পরিণমনের ফলে নতুন চাহিদা বা সক্ষমতা তৈরি হতে পারে।
(৭) অচেতন প্রক্রিয়া : পরিণমন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে এবং শিশু বা ব্যক্তি সাধারণত এ প্রক্রিয়ার জন্য সচেতন থাকে না। তবে এর ফলাফল হিসেবে আচরণ পরিবর্তিত হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের গুরুত্ব : শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ -
(১) শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা : পরিণমন শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলির স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত করে। অনেক ক্ষমতা ও আচরণ কেবল পরিণমনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অর্জিত হয়।
(২) শিখন কার্যকারিতা বাড়ানো : শিশুর আচরণ ও দক্ষতা পরিণমনের নিয়ন্ত্রণে থাকায়, শিক্ষকের উপযুক্ত শিখন প্রচেষ্টা কার্যকর হয়। অর্থাৎ, ভালো ফলাফল পেতে শিক্ষার্থীকে তার বিকাশ পর্যায় অনুযায়ী শিখানো প্রয়োজন।
(৩) শিক্ষা পরিকল্পনার জন্য নির্দেশনা : শিক্ষার্থীর শেখার সক্ষমতা ও বিকাশ পর্যায় বিবেচনা করে পাঠ্যক্রম ও শিক্ষা পরিকল্পনা তৈরি করা যায়। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমন শিক্ষার উদ্দেশ্য সফল করতে সহায়ক হয়।
উপসংহার : পরিণমন মানুষের স্বাভাবিক বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এটি শিশুর শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তনের জন্য দায়ী এবং শিক্ষাক্ষেত্রে শেখার কার্যকারিতা ও পাঠ্য পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়ক। তাই পরিণমন শিক্ষার সফলতার জন্য অপরিহার্য।
2. স্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি আলোচনা করো। [WBCHSE '23, '15, '08, '04, '03, '01]
উত্তর : ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের মনোবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যান শিশুর মানসিক ক্ষমতা সম্পর্কে একটি বিজ্ঞানসম্মত ও গবেষণালব্ধ মতবাদ উপস্থাপন করেন। এই মতবাদই মানসিক ক্ষমতার দ্বিউপাদান তত্ত্ব বা স্পিয়ারম্যানের দ্বিউপাদান তত্ত্ব নামে পরিচিত। এই তত্ত্বটি American Journal of Psychology-তে "General Intelligence Objectively Determined and Measured"-প্রবন্ধে তাঁর দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি প্রকাশ করেন।
স্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বটির মূলতত্ত্ব : চার্লস স্পিয়ারম্যানের মতে, মানুষের যে কোনো বৌদ্ধিক কাজ সম্পাদনের জন্য দুটি পৃথক মানসিক ক্ষমতা কাজ করে। প্রথমটি হল সাধারণ উপাদান বা G উপাদান, যাকে G Factor (General Factor) বলা হয়। দ্বিতীয়টি হল বিশেষ উপাদান বা S উপাদান, যা নির্দিষ্ট কোনো বুদ্ধিমূলক কাজে কার্যকর হয় এবং একে S Factor (Specific Factor) বলা হয়।
জ্যামিতিক ব্যাখ্যা : চিত্রের মাধ্যমে স্পিয়ারম্যান তাঁর তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করেছেন। চিত্রে মাঝখানের বড়ো বৃত্তটি সাধারণ উপাদান (G)-কে নির্দেশ করে। এর চারপাশে থাকা ছোটো তিনটি বৃত্ত তিনটি পৃথক বুদ্ধিমূলক কাজকে বোঝায়, যেগুলি যথাক্রমে W₁, W₂ ও W₃। প্রতিটি বৌদ্ধিক কাজ সম্পাদনের জন্য কিছু পরিমাণ G উপাদান এবং কিছু পরিমাণ S উপাদান প্রয়োজন হয়। যাদের মধ্যে G উপাদানের পরিমাণ বেশি, তারা এক বিষয়ের জ্ঞানকে অন্য বিষয়ে সহজে প্রয়োগ করতে পারে।যেমন -W₁ কাজের জন্য প্রয়োজন G + S₁, W₂ কাজের জন্য প্রয়োজন G + S₂, W₃ কাজের জন্য প্রয়োজন G + S₃।
গাণিতিক ব্যাখ্যা : চার্লস স্পিয়ারম্যান তাঁর দ্বিউপাদান তত্ত্বের একটি গাণিতিক ও পরিসংখ্যানভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তাঁর মতে, পৃথিবীর সমস্ত বস্তু ও ঘটনার মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান।
পরিসংখ্যানগত যুক্তি : পরিসংখ্যানের সাহায্যে স্পিয়ারম্যান দেখান যে এক ক্ষমতার সঙ্গে অন্য ক্ষমতার সম্পর্ক থাকে। এই সম্পর্ককে বলা হয় সহগতি (Correlation)। যেখানে একটি ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে অন্য ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়, তাকে বলা হয় ধনাত্মক সহগতি। আর যেখানে একটি ক্ষমতা কমলে অন্য ক্ষমতা বাড়ে, তাকে বলা হয় ঋণাত্মক সহগতি। আর যে দুটি ক্ষমতার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই, তাকে বলা হয় শূন্য সহগতি।
এই সহগতির সম্পর্ক বোঝাতে তিনি যে সমীকরণটি ব্যবহার করেন, তাকে বলা হয় টেট্রাড সমীকরণ।
সমীকরণটি হল -
rₐₚ × rᵦq − rₐq × rᵦₚ = 0
G উপাদানের বৈশিষ্ট্য : G উপাদানের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : 1. G উপাদান জন্মগত, 2. এটি সর্বজনীন প্রকৃতির, 3. প্রতিটি বুদ্ধিমূলক কাজে এই ক্ষমতা প্রয়োজন, 4. G উপাদান পরিমাপযোগ্য, 5. ব্যক্তিভেদে G উপাদানের পরিমাণ ভিন্ন হয়, 6. এটি সাধারণ মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত, এবং 7. যার মধ্যে G উপাদানের পরিমাণ বেশি, তার জীবনে সাফল্যের সম্ভাবনাও বেশি।
S উপাদানের বৈশিষ্ট্য : S উপাদানের বৈশিষ্ট্যগুলি হল- 1. S উপাদান অর্জিত, 2. শিখনের মাধ্যমে এই ক্ষমতা অর্জন করা যায়, 3. ব্যক্তিভেদে S উপাদান গুণগতভাবে ভিন্ন হয়, 4. এই ক্ষমতা নির্দিষ্ট বুদ্ধিমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত, বিশেষ মানসিক ক্ষমতা সংখ্যায় অনেক, এবং একই ব্যক্তির বিভিন্ন কাজে S উপাদান ভিন্ন ভিন্ন হয়।
সমালোচনা : স্পিয়ারম্যানের দ্বিউপাদান তত্ত্ব বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে। যেমন : 1. থার্স্টোনের মতে, G উপাদানের অস্তিত্ব প্রমাণ করা যায় না, 2. স্পিয়ারম্যান S উপাদানের তুলনায় G উপাদানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, এবং 3. থর্নডাইকের মতে, বুদ্ধি কেবলমাত্র দুটি শক্তির সমন্বয় নয়।
শিক্ষাগত গুরুত্ব : সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও এই তত্ত্বটির শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্ব খুবই উল্লেখযোগ্য -
(১) সাধারণ বুদ্ধি সম্পর্কে ধারণা দেয় : এই তত্ত্বের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিদ্যমান সাধারণ বুদ্ধির স্তর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। ফলে শিক্ষার্থীর শেখার ক্ষমতা ও সম্ভাবনা বুঝতে সুবিধা হয়।
(২) পাঠক্রম নির্বাচনে সহায়তা করে : শিক্ষার্থীর বুদ্ধির ধরন ও ক্ষমতা অনুযায়ী উপযুক্ত পাঠক্রম নির্বাচন করা সহজ হয়। এর ফলে পাঠ্যবিষয় শিক্ষার্থীর জন্য আরও অর্থবহ ও কার্যকর হয়ে ওঠে।
(৩) বৃত্তিমূলক নির্দেশনায় সাহায্য করে : শিক্ষার্থীর মানসিক ক্ষমতা বিশ্লেষণ করে তার উপযোগী পেশা বা বৃত্তি নির্বাচনে এই তত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার : সবশেষে বলা যায়, মানসিক ক্ষমতার ব্যাখ্যায় চার্লস স্পিয়ারম্যানের দ্বিউপাদান তত্ত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই তত্ত্বে নানা সংশোধন ও পরিমার্জন ঘটলেও এর মূল ধারণা আজও শিক্ষাক্ষেত্রে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। এই তত্ত্ব বুদ্ধির বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে সহায়ক হওয়ায় শিক্ষা পরিকল্পনা, পাঠক্রম নির্ধারণ এবং বৃত্তিমূলক নির্দেশনায় তা বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে।
3. শিখন ও পরিণমনের মধ্যে সম্পর্ক কীরূপ ? শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা আলোচনা করো। [HS-2016]
উত্তর : শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে শিখন ও পরিণমন এই দুটি প্রক্রিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিখনের মাধ্যমে শিশু নতুন জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে, আর পরিণমনের মাধ্যমে তার স্বাভাবিক দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে। এই দুটি প্রক্রিয়া পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত।
শিখন ও পরিণমনের সম্পর্ক :
i. পারস্পরিক সম্পর্ক : শিখন ও পরিণমন দুটি পৃথক প্রক্রিয়া। পরিণমন হল স্বতঃস্ফূর্ত জৈবিক বিকাশ, যা শিখনের উপর নির্ভরশীল নয়। কিন্তু শিখন পরিণমনের উপর নির্ভরশীল। শিশু যখন উপযুক্ত পরিণমনের স্তরে পৌঁছায়, তখনই কার্যকর শিখন সম্ভব হয়।
ii. বিকাশমূলক প্রক্রিয়া : শিখন ও পরিণমন উভয়ই বিকাশমূলক প্রক্রিয়া। পরিণমন শিখনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না, কিন্তু শিখন পরিণমনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে সহায়তা করে।
iii. শিক্ষামূলক গুরুত্ব : শিক্ষাবিদদের মতে, শিশুকে নতুন কিছু শেখাতে হলে তার উপযুক্ত পরিণমন থাকা আবশ্যক। উপযুক্ত পরিণমন ছাড়া শিখন কখনোই সফল হয় না।
উপসংহার : অতএব বলা যায়, পরিণমন ও শিখন একে অপরের পরিপূরক। পরিণমন শিখনের ভিত্তি তৈরি করে এবং শিখন সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে শিশুর বিকাশকে সম্পূর্ণতা প্রদান করে।
শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক বিকাশের স্তরের উপর নির্ভর করেই তার শিখনক্ষমতা গড়ে ওঠে। তাই শিক্ষাব্যবস্থায় পরিণমনের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়।
শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা :
i. দৈহিক ও মানসিক বিকাশ : শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশের মাধ্যমে পরিণমনের প্রকাশ ঘটে। এর ফলে ভাষার বিকাশ হয়, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যবহার উন্নত হয় এবং শিশু পাঠগ্রহণে সক্ষম হয়ে ওঠে।
ii. শিখন ক্ষমতার গতি ও সীমা নির্ধারণ : শিখনের গতি ও সীমা নির্ধারণে পরিণমনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্দিষ্ট পরিণমনের পরেই শিশুর শিখন শুরু হয় এবং পরিণমনই ঠিক করে দেয় কোন সময়ে কোন ধরনের শিখন ফলপ্রসূ হবে।
iii. ভাষা বিকাশে সহায়তা : শিক্ষার্থীর ভাষাবিকাশে পরিণমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে। উপযুক্ত পরিণমন ছাড়া ভাষার সঠিক বিকাশ সম্ভব নয়।
iv. ইন্দ্রিয়সমন্বয় : শিক্ষার্থীর সার্থক বিকাশের মাধ্যমে জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কর্মেন্দ্রিয়ের মধ্যে সমন্বয় গড়ে ওঠে, যা শিক্ষার্থীকে যে-কোনো বিষয় শিখতে সাহায্য করে।
v. পরিণমনের ধরন নির্ধারণ : কিছু ক্ষেত্রে শিখন পরিণমনের ধরন নির্ধারণ করে। যেমন অনুশীলনের মাধ্যমে শিশুদের ইন্দ্রিয়সমূহ পরিমার্জিত করা যায়।
vi. জীবনবিকাশ : শিক্ষার্থীর জীবনবিকাশে শিখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, আর শিখনকে ফলপ্রসূ করতে পরিণমনের বিকাশ অপরিহার্য।
vii. পাঠক্রম ও শিক্ষা পরিকল্পনা : উপযুক্ত পরিণমন না হলে শিক্ষার্থীর পাঠগ্রহণে সমস্যা দেখা দেয়। তাই পরিণমনের স্তর অনুযায়ী পাঠক্রম ও শিক্ষা পরিকল্পনা করা হয়।
viii. পরিণমনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা : শৈশব ও বয়ঃসন্ধি পর্যায়ে সঠিক পাঠক্রম রচনার জন্য পরিণমনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন।
উপসংহার : সুতরাং বলা যায়, শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমন একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করে। পরিণমনকে গুরুত্ব না দিলে শিক্ষাব্যবস্থা কখনোই কার্যকর ও সফল হতে পারে না।
4. প্রেষণা বলতে কী বোঝ ? যে-কোনো দুজন মনোবিদ প্রদত্ত প্রেষণার সংজ্ঞা লেখো। সংক্ষেপে প্রেষণাচক্র বর্ণনা করো।
অথবা, প্রেষণা কাকে বলে ? প্রেষণা চক্র সম্পর্কে আলোচনা করো। প্রেষণার শিক্ষাগত গুরুত্ব লেখো।
উত্তর : প্রেষণার ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Motivation। এই 'Motivation' শব্দটি Latin শব্দ 'Movere' থেকে এসেছে, যার অর্থ হল 'To move' অর্থাৎ গতিশীল করতে। অর্থাৎ মনের অভ্যন্তর থেকে যে শক্তি আমাদের চালনা করে তাই হল প্রেষণা।
প্রেষণা বলতে এমন এক ধরনের অভ্যন্তরীণ শক্তিকে বোঝায়, যা মানুষকে কোনো কাজ করার জন্য আগ্রহী করে তোলে। এই শক্তি ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেয় এবং তার আচরণকে পরিচালিত করে। প্রেষণার ফলে মানুষ বাধা বা সমস্যার মধ্যেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে এবং কাঙ্ক্ষিত আচরণ বজায় রাখতে সক্ষম হয়।
দুই মনোবিদের সংজ্ঞা : প্রেষণা সম্পর্কে দুজন মনোবিদের সংজ্ঞা নীচে উল্লেখ করা হল-
১. মনোবিদ উইনার : প্রেষণা হল এমন অবস্থা যা ব্যক্তিকে কোনো ক্রিয়া সম্পাদনে উদ্দীপিত করে, লক্ষ্যনিষ্ঠভাবে পরিচালিত করে এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মে নিয়োজিত রাখে।
২. ইলিয়ট : প্রেষণা হল একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক অবস্থা, যা আমাদের কর্মের প্রেরণা দেয়।
প্রেষণাচক্র : প্রেষণা হল মানুষের এমন একটি মানসিক অবস্থা, যা না থাকলে কোনো কাজেই সফলতা আসে না। মানুষের শিখন, স্মৃতি, মনোযোগ ও আগ্রহ সব মানসিক কাজের সঙ্গেই প্রেষণার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মানুষের মনে যখন কোনো অভাব বা চাহিদা তৈরি হয়, তখন সেই অভাব পূরণের জন্য মানুষ নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায়। প্রেষণার এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি কয়েকটি স্তর বা ধাপে সম্পন্ন হয় এবং ধাপগুলি একটির পর একটি চক্রাকারে ঘটে। এই চক্রাকারে চলা প্রক্রিয়াকেই প্রেষণাচক্র বলা হয়। এই স্তরগুলি হল- (১) অভাববোধ বা চাহিদা, (২) তাড়না, (৩) সহায়ক আচরণ এবং (৪) লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য।
(১) অভাববোধ বা চাহিদা : প্রেষণার প্রথম স্তর হল অভাববোধ বা চাহিদা। চাহিদা বলতে কোনো কিছুর প্রয়োজনীয়তার অভাববোধকে বোঝায়। মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের চাহিদা থাকে, যেমন- ক্ষুধা, তৃষ্ণা, নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা, মাতৃত্ব ইত্যাদি। এই অভাববোধ থেকেই প্রেষণার সূচনা হয়।
(২) তাড়না : চাহিদা থেকে যে মানসিক উত্তেজনা বা অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়, তাকে তাড়না বলা হয়। এই তাড়নাই ব্যক্তিকে সক্রিয় করে তোলে এবং চাহিদা পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য করে।
(৩) সহায়ক আচরণ বা লক্ষ্যমুখী আচরণ : তাড়নার ফলে ব্যক্তি তার অস্বস্তি দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের আচরণ করে। উদ্দেশ্য বা আকাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভের জন্য যে আচরণ করা হয়, তাকে সহায়ক বা লক্ষ্যমুখী আচরণ বলা হয়।
(৪) উদ্দেশ্য পূরণ : প্রেষণাচক্রের শেষ স্তর হল উদ্দেশ্য পূরণ। চাহিদা পূরণ হলে ব্যক্তির উত্তেজনা, অস্বস্তি ও বিরক্তিবোধের অবসান ঘটে এবং সে সাময়িকভাবে সন্তুষ্টি লাভ করে।
প্রেষণার শিক্ষাগত গুরুত্ব : প্রেষণা শিখনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক শর্ত। প্রেষণা থাকলে শিক্ষার্থী শেখার প্রতি আগ্রহী হয় এবং শিখন সফল হয়। এটি মানুষকে কাজে উদ্বুদ্ধ করে ও লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।
(১) আগ্রহ ও মনোযোগ বৃদ্ধি : প্রেষণা শিক্ষার্থীর মধ্যে শেখার আগ্রহ সৃষ্টি করে এবং মনোযোগী হতে সাহায্য করে, ফলে শিখন কার্যকর হয়।
(২) আচরণ ও দিকনির্দেশনা প্রদান : প্রেষণা শিক্ষার্থীর আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সঠিক আচরণ ও লক্ষ্য নির্বাচন করতে সহায়তা করে।
(৩) উদ্যোগ ও অধ্যবসায় বৃদ্ধি : প্রেষণার ফলে শিক্ষার্থী কাজে উদ্যোগী হয় এবং কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যায়।
(৪) আত্মবিশ্বাস ও লক্ষ্যনিষ্ঠ শিখন : প্রশংসা ও উৎসাহের মাধ্যমে প্রেষণা বৃদ্ধি পায়, যা শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অভিমুখে শিখনে এগিয়ে নিয়ে যায়।
উপসংহার : অতএব বলা যায়, প্রেষণা মানুষের আচরণ পরিচালনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক শক্তি। অভাববোধ থেকে শুরু করে উদ্দেশ্য পূরণ পর্যন্ত যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া চলে, তাকেই প্রেষণাচক্র বলা হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রেষণার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রেষণা শিক্ষার্থীর আগ্রহ, মনোযোগ, আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায় বৃদ্ধি করে এবং শিখনকে সফল ও লক্ষ্যনিষ্ঠ করে তোলে।
5. থার্স্টোন-এর প্রাথমিক বা বহু বা দলগত উপাদান তত্ত্বটি আলোচনা করো। শিক্ষাক্ষেত্রে এই তত্ত্বের গুরুত্ব কী?
অথবা, থার্স্টোন-এর দলগত উপাদান তত্ত্বটি আলোচনা করো। শিক্ষাক্ষেত্রে এর গুরুত্ব লেখো।
উত্তর : থার্স্টোনের দলগত বা বহু উপাদান তত্ত্ব : মনোবিদ থার্স্টোন ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর গ্রন্থ The Nature of Intelligence-এ বুদ্ধি সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব উপস্থাপন করেন, যা দলগত উপাদান তত্ত্ব (Group Factor Theory) নামে পরিচিত। তিনি বহু মানসিক অভীক্ষা ও পরীক্ষার মাধ্যমে দেখান যে বুদ্ধি কোনো একক বা সাধারণ শক্তি নয়। বরং বুদ্ধি গঠিত হয় একাধিক মৌলিক মানসিক ক্ষমতার সমন্বয়ে। থার্স্টোনের মতে, মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সামর্থ্য বিদ্যমান থাকে এবং এগুলি একে অপরের থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে এই সামর্থ্যগুলির পরিমাণ একরকম নয়। কোনো নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের সময় সব সামর্থ্য ব্যবহার হয় না; বরং কয়েকটি নির্দিষ্ট সামর্থ্য একত্রে কাজ করে সেই কাজটি সম্পন্ন করে। এভাবেই বিভিন্ন কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের সমন্বয় ঘটে। থার্স্টোন মানুষের বুদ্ধির মধ্যে মোট ৭টি প্রাথমিক বা মৌলিক সামর্থ্যের কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলি হল-
৭ টি মৌলিক উপাদানের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা :
[1] সংখ্যা সম্বন্ধীয় উপাদান (N) : এই উপাদানের সাহায্যে ব্যক্তি সংখ্যাভিত্তিক হিসাব-নিকাশ করতে পারে। দৈনন্দিন জীবনের গাণিতিক সমস্যা বা পরিমাপ সংক্রান্ত কাজে এই ক্ষমতা বিশেষভাবে কাজে লাগে।
[2] বাচনিক উপাদান (V) : এই ক্ষমতা মানুষের ভাষা বোঝার সামর্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। শব্দের অর্থ, বাক্যের ভাব ও বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ বোঝার ক্ষমতা এই উপাদানের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
[3] ক্ষেত্র বা স্থান সম্বন্ধীয় উপাদান (S) : এই উপাদান মানুষের স্থান ও দিক সংক্রান্ত ধারণার সঙ্গে যুক্ত। এর মাধ্যমে মানুষ কোনো বস্তুর আকার, অবস্থান, দূরত্ব বা ঘূর্ণন সহজে বুঝতে পারে এবং মানসিকভাবে কল্পনা করতে সক্ষম হয়।
[4] বাক্টুত্ব উপাদান (W ) : এই উপাদান ব্যক্তি কত দ্রুত ও সহজে শব্দ ব্যবহার করতে পারে তা নির্দেশ করে। কথা বলা, লেখা কিংবা শব্দ গঠনের ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
[5] বিচারশক্তি সম্বন্ধীয় উপাদান (R) : এই ক্ষমতার সাহায্যে মানুষ যুক্তির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে। অজানা বা জটিল পরিস্থিতি থেকে যুক্তি প্রয়োগ করে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে এই উপাদান সহায়তা করে।
[6] প্রত্যক্ষ সম্বন্ধীয় উপাদান (P) : দ্রুত ও নির্ভুলভাবে কোনো বস্তু বা ঘটনাকে প্রত্যক্ষ ও শনাক্ত করার ক্ষমতা।
[7] স্মৃতিশক্তি সম্বন্ধীয় উপাদান (M) : এই উপাদান মানুষের পূর্বে শেখা বিষয় সংরক্ষণ ও প্রয়োজনে তা মনে করার ক্ষমতাকে বোঝায়। শিক্ষা ও পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই সামর্থ্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
chitro page roy 16
চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা : চিত্র অনুযায়ী,। নং কাজের জন্য (S), (N), (V) এবং (M) এই চারটি ক্ষমতার প্রয়োজন। ।। নং কাজের জন্য (V), (M), (P) এবং (R) ক্ষমতার প্রয়োজন। এছাড়া III নং কাজের জন্য (W), (V) এবং (P) প্রয়োজন। এইভাবে কয়েকটি মৌলিক উপাদানের সমন্বয়ে বুদ্ধি গঠিত হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্ব :
i. থার্স্টোনের এই তত্ত্বের ভিত্তিতে শিক্ষাক্ষেত্রে মানসিক ক্ষমতা পরিমাপের জন্য বিভিন্ন ধরনের অভীক্ষা ও পরীক্ষার উন্নয়ন হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা নির্ণয়ে সহায়ক।
ii. এই তত্ত্ব শিক্ষার্থীদের পৃথক পৃথক মানসিক ক্ষমতা যেমন ভাষাগত, সংখ্যাগত বা যুক্তিভিত্তিক ক্ষমতার বিকাশে সাহায্য করে এবং তাদের সামগ্রিক মানসিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে।
iii. থার্স্টোনের তত্ত্ব বিশেষ করে বয়স্ক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী, কারণ তাদের মানসিক ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে স্পষ্ট ও পৃথকভাবে বিকশিত থাকে।
iv. এই তত্ত্বের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষমতার প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত যোগ্যতা ও দুর্বলতা নির্ণয় করতে পারেন।
🔹লেখকের শেষ মন্তব্য : আমাদের প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণীর চতুর্থ সেমিস্টার শিক্ষাবিজ্ঞান সাজেশন ই-বুকটিতে(PDF) বোর্ডের নতুন সিলেবাস ও নতুন প্রশ্নপত্রের নিয়ম মেনে প্রতিটি অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর খুব সহজ ও পরিষ্কারভাবে সাজানো হয়েছে। তাই এই ই-বুক(PDF)টি কিনতে হলে মেনু অপশনে ক্লিক করে বিস্তারিত জানুন এবং প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
File Details :
PDF Name : প্রথম অধ্যায় শিখন PDF
Size : 1 MB
No. of Pages : 3
Mode : Read-only (Online)
Download Link :
| আরো পড়ুন | প্রশ্নোত্তর |
|---|---|
| 1. শিখন এবং শিখন কৌশল প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
| 2. শিক্ষাগত প্রযুক্তিবিদ্যা প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
| 3. দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় শিখন PDF | Click here |
WB Semester Team
📞 & 💬 9883566115
