🔹 Class 12 4th Semester Education 9th Chapter Question Answer
[প্রতিটি প্রশ্নের মান 5]
1. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কী বোঝো? শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা ICT বলতে এমন এক ধরনের প্রযুক্তিকে বোঝায়, যার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, স্থানান্তর এবং আদান–প্রদান করা যায়। এই প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত হল কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, সফটওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া, ই-মেল, ভিডিও কনফারেন্সিং ও ই-লার্নিং ইত্যাদি।
ICT শুধু তথ্য সংরক্ষণ বা ব্যবস্থাপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও প্রশাসন ক্ষেত্রেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ICT ব্যবহারের ফলে শিক্ষাদান ও শিখন প্রক্রিয়া আরও আকর্ষণীয়, দ্রুত এবং কার্যকর হয়ে উঠেছে। শিক্ষকরা ICT-এর সাহায্যে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শেখার সুযোগ পায়। দূরশিক্ষা, ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষ, অনলাইন পরীক্ষা ও ই-লাইব্রেরির মতো ব্যবস্থাও ICT-এর মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।
শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যগুলি হল :
i. সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি : ICT শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্লাসের ভেতরে এবং ক্লাসের বাইরে একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে। এর মাধ্যমে তারা পরস্পরের সঙ্গে জ্ঞান বিনিময় করতে পারে এবং বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
ii. যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি : ICT-এর সাহায্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একই স্থানে উপস্থিত না থেকেও সহজে তথ্য আদান–প্রদান ও যোগাযোগ করতে পারে।
iii. ডিজিটাল সম্পদের গ্রহণযোগ্যতা : ICT ডিজিটাল তথ্য ও সম্পদ গ্রহণে সক্ষম। এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনলাইন বিষয়বস্তু সহজেই সংগ্রহ করতে পারে।
iv. ভিন্নভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীদের সহায়তা : ভিন্নভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীদের শেখার ক্ষেত্রে ICT বিশেষভাবে সহায়তা করে এবং তাদের শিক্ষাগ্রহণকে সহজ করে তোলে।
v. বহুমাধ্যমিক মিথস্ক্রিয়া : ICT গ্রাফিক্স, লেখা, শব্দ, বক্তব্য ও চিত্রের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটিয়ে শিক্ষণকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
vi. নমনীয় ব্যবহার : ICT ব্যবহারের ক্ষেত্রে নমনীয়তা রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন পরিবেশে এটি ব্যবহার করা যায়।
vii. প্রেষণা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি : ICT শিক্ষার্থীদের শেখার প্রতি আগ্রহ ও প্রেষণা সৃষ্টি করে এবং নতুন নতুন ধারণা গঠনে উৎসাহিত করে।
উপসংহার : সুতরাং বলা যায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়াকে আধুনিক, কার্যকর ও শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক করে তুলেছে এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
2. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারগুলি লেখো।
উত্তর : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) আজকের আধুনিক সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা, ব্যবসা, বিজ্ঞান, কৃষি, অফিস-আদালত, এবং সামাজিক সম্পর্ক প্রায় সব ক্ষেত্রেই ICT-এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এই প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে আরও সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর করে, একই সঙ্গে সমাজের প্রতিটি স্তরে উন্নয়ন ও গতিশীলতা নিয়ে আসে।
ICT-এর ব্যবহার :
i. গবেষণা ও বিজ্ঞান ক্ষেত্রে : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষণা সহজ, দ্রুত ও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়। টেলিভিশন, ইন্টারনেট, ই-মেল ও মোবাইলের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা তাদের কাজ দ্রুত শেয়ার করতে পারেন।
ii. ব্যবসা ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে : ICT ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, উৎপাদন ও বিপণনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কম সময়, কম খরচে পণ্য উৎপাদন ও পরিবহন সম্ভব, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া যায়।
iii. যোগাযোগ ও সামাজিক মাধ্যম : ই-মেল, ফ্যাক্স, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যোগাযোগ সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, গুগল, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে নতুন সম্পর্ক তৈরি করা সহজ হয়।
iv. শিক্ষা ও শিক্ষাদান : ICT শিক্ষাদানকে প্রাণবন্ত করে। প্রজেক্টর, ভিডিও লার্নিং, কম্পিউটার, ই-মেল, চ্যাট ও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থী শিক্ষক ছাড়াও পাঠ গ্রহণ করতে পারে।
v. কৃষি ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে : ICT কৃষিকে উন্নত ও সাশ্রয়ী করে। ফসলের উন্নত উৎপাদন কৌশল, জমির পরীক্ষা, বায়োটেকনোলজি ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
উপসংহার : অতএব, ICT সঠিকভাবে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে এটি সমাজের জন্য একটি বিশাল সহায়ক শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষাক্ষেত্রে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, বিজ্ঞান ও কৃষিক্ষেত্রে এর সঠিক প্রয়োগ মানুষের জীবনকে আরও উন্নত, গতিশীল এবং সুবিধাজনক করে তোলে। ICT শুধু সুবিধা দেয় না, বরং সমাজের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
3. শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-র ভূমিকা লেখো।
উত্তর : শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) বর্তমানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষাদান, শিখন, প্রশাসন, গবেষণা ও প্রকাশনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ICT শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও আধুনিক, কার্যকর ও গতিশীল করে তুলেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-র প্রধান ভূমিকাগুলি হল -
[1] শিক্ষণে ICT-র ভূমিকা :
i. শিখন-সহায়ক উপকরণ হিসেবে : শিক্ষাক্ষেত্রে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, মাল্টিমিডিয়া, ভিডিও, অডিও ক্লিপ ইত্যাদি ICT-ভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার করে পাঠদান করা হয়। ফলে বিষয়বস্তু সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় হয়।
ii. শিক্ষাদান পদ্ধতির উন্নয়ন : ICT ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ICT-কেন্দ্রিক শিক্ষাদান পদ্ধতি গড়ে উঠেছে, যা শিক্ষাকে আধুনিক ও কার্যকর করেছে।
iii. স্ব-শিখন পদ্ধতির উন্নয়ন : ICT ব্যবহারের ফলে Computer Aided Instruction (CAI), দূরশিক্ষা ও অনলাইন শিক্ষার প্রসার ঘটেছে, যা শিক্ষার্থীদের স্ব-শিখনে সহায়তা করে।
[2] শিখনে ICT-র ভূমিকা :
i. শিখনের উন্নয়ন : ICT ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পুনরাবৃত্তি করতে পারে। ফলে শিখন প্রক্রিয়া আরও উন্নত হয়।
কম্পিউটারভিত্তিক শিখন : ICT শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষ করে তোলে। এর ফলে তারা অল্প সময়ে প্রচুর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।
[3] প্রশাসনে ICT-র ভূমিকা :
i. রেকর্ড সংরক্ষণ : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রশাসনিক রেকর্ড যেমন ছাত্রছাত্রীদের তথ্য, ফলাফল, উপস্থিতি ইত্যাদি ICT-র মাধ্যমে সহজে ও নিরাপদে সংরক্ষণ করা যায়।
ii. যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন : অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে দ্রুত ও সহজ যোগাযোগ স্থাপনে ICT গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
[4] গবেষণায় ICT-র ভূমিকা :
i. সার্চ ইঞ্জিন ও ই-লাইব্রেরি : ICT-র সাহায্যে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন ও ই-লাইব্রেরি ব্যবহার করে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সহজে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যায়।
ii. অনলাইন সম্পদ ব্যবহার : বিশ্বের যে-কোনো অঞ্চলের শিক্ষার্থী বা শিক্ষক ICT-র মাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন সম্পদের তথ্য জানতে পারে।
iii. বিশ্লেষণে সহায়তা : গবেষণালব্ধ তথ্য ও ফলাফল অল্প সময়ে বিশ্লেষণ করতে ICT সহায়তা করে।
[5] প্রকাশনায় ICT-র ভূমিকা : ICT-র সাহায্যে ই-বুক, ডিজিটাল নোট ও অনলাইন শিক্ষাসামগ্রী প্রকাশ করা যায়। ই-বুকে ভিডিও, অ্যানিমেশন ও চিত্র সংযোজন করে বিষয়বস্তুকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়।
উপসংহার : সুতরাং বলা যায়, শিক্ষাক্ষেত্রে ICT শিক্ষাদান, শিখন, প্রশাসন, গবেষণা ও প্রকাশনার প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিক ও কার্যকর করে তুলেছে।
🔹লেখকের শেষ মন্তব্য : আমাদের প্রকাশিত দ্বাদশ শ্রেণীর চতুর্থ সেমিস্টার শিক্ষাবিজ্ঞান সাজেশন ই-বুকটিতে(PDF) বোর্ডের নতুন সিলেবাস ও নতুন প্রশ্নপত্রের নিয়ম মেনে প্রতিটি অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর খুব সহজ ও পরিষ্কারভাবে সাজানো হয়েছে। তাই এই ই-বুক(PDF)টি কিনতে হলে মেনু অপশনে ক্লিক করে বিস্তারিত জানুন এবং প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
File Details :
PDF Name : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিদ্যা PDF
Size : 1 MB
No. of Pages : 3
Mode : Read-only (Online)
Download Link :
| আরো পড়ুন | প্রশ্নোত্তর |
|---|---|
| 1. হারুন সালেমের মাসি গল্প | Click here |
| 2. ক্লাস 12 শিক্ষা প্রযুক্তিবিদ্যার উপাদান PDF | Click here |
| 3. চতুর্থ অধ্যায় ‘মানসিক স্বাস্থ্য PDF | Click here |
WB Semester Team
Call & WhatsApp : 9883566115
