WB Semester Display Ads-1

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

ক্লাস 11 বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টার শিক্ষাবিজ্ঞান বৃদ্ধি ও বিকাশ | Class 11 2nd Semester Education Question Answer

0

Unit : 2 বৃদ্ধি ও বিকাশ PDF


ভূ(caps)মিকা : একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিষ্টার শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে 40 নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। এই 40 নম্বর এর মধ্যে শিক্ষাবিজ্ঞান সিলেবাসের Group-C Unit : 2 "বৃদ্ধি ও বিকাশ" থেকে মোট 14 নম্বর আসবে। অর্থাৎ 2 নম্বর মানের 2 টি প্রশ্ন এবং 10 নম্বর মানের একটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। তাহলে মোট 4+10=14 নম্বর। সুতরাং এই অধ্যায়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা পরিষ্কার বুঝতে পারছি। Group-C Unit : 2 "বৃদ্ধি ও বিকাশ" এই অধ্যায়টি কে তিনটি পর্বে ভাগ করা দেওয়া হয়েছে। যেমন : 1. বৃদ্ধি ও বিকাশের অর্থ 2.বিকাশের উপাদানসমূহ এবং 3. বিকাশের স্তরসমূহ। তোমাদের সুবিধার জন্য একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিষ্টার শিক্ষাবিজ্ঞানের "বৃদ্ধি ও বিকাশ" অধ্যায় থেকে 10 নম্বর মানের খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তরসহ PDF নিচে দিলাম। তবে একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিষ্টার সাজেশন ই-বুকগুলি(PDF) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের Menu Option এ ক্লিক করে দেখতে পারেন।
ক্লাস 11 বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর

🔹 একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টার শিক্ষাবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর

[প্রতিটি প্রশ্নের মান : 10] 
1. প্রাক্ প্রাথমিক শিক্ষা কী ? প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যগুলি কী কী ?  [XI-2008, 02, 00]
অথবা, 
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কী ? কোঠারি কমিশনের মতে, প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি লেখো।
উত্তর : প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার ধারণা : গান্ধিজি বলেছেন, শিশুর শিক্ষা মাতৃগর্ভ থেকেই শুরু হয়। জন্মের পর শিশুর পাঁচ বা ছয় বছর বয়স পর্যন্ত যে শিক্ষা লাভ করে, সেটিই প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা। এটি প্রথাগত শিক্ষার প্রথম স্তর। সাধারণত জন্ম থেকে পাঁচ-ছয় বছর বয়স পর্যন্ত সময়কে শৈশব বলা হয়। এই সময়ে শিশু যে শিক্ষা গ্রহণ করে, তাকে প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা বলা হয়। দুই-আড়াই থেকে পাঁচ-ছয় বছর বয়স পর্যন্ত, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে শিশুরা যেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে, সেটিও প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত।
প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য:
1. অভ্যাস গঠন : প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল শিশুর মধ্যে সু-অভ্যাস তৈরি করা। শিশুদের মধ্যে সু-অভ্যাস গড়ে উঠলে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনবিকাশ অনেক ভালো হয়।
2. মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি : এই শিক্ষার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হল শিশুর ভাষা, চিন্তাশক্তি এবং কল্পনাশক্তি যথাযথভাবে বিকাশ করা। এর মাধ্যমে শিশুর মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সে নতুন জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা গ্রহণে সক্ষম হয়।
3. নৈতিক বোধ গঠন  : এই শিক্ষায় শিশুর মধ্যে ঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা তৈরি করা। এতে শিশুর চারিত্রিক গুণাবলি ও নৈতিক বোধ বিকশিত হয়, যা তাকে সমাজে দায়িত্বশীল ও আদর্শবান নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
4. সামাজিক বিকাশ : এই শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুর মধ্যে সামাজিকতাবোধ ও সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলা। এটি শিশুকে সমাজমুখী ও দায়িত্বশীল করে তোলে।
5. শারীরিক বিকাশ : শিশুর শারীরিক বিকাশে সাহায্য করতে কোঠারি কমিশন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রমে বিভিন্ন অঙ্গসঞ্চালনমূলক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
6. প্রক্ষোভিক বিকাশ : এই শিক্ষার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিশুর আবেগ বা প্রক্ষোভের সঠিক বিকাশ ঘটানো। কারণ শিশু এই বয়সে রাগ, ভয়, দুঃখ, হিংসা, হাসি ও কান্না ইত্যাদি প্রক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
7. সৃজনশীলতা ও নান্দনিকতা বৃদ্ধি : এই শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর মধ্যে সৌন্দর্যবোধ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা হয়। শিশুকে নাচ, গান, ছবি আঁকা, ছড়া বলা ইত্যাদির মাধ্যমে সৌন্দর্য ও সৃজনশীলতার অনুভূতি গড়ে তোলা হয়।
8. কৌতূহলের বিকাশ : কৌতূহল থেকে জ্ঞানের জাগরণ ঘটে। তাই এই স্তরের শিক্ষার একটি উদ্দেশ্য হল শিশুর মধ্যে কৌতূহল প্রবণতার বিকাশ ঘটানো।
9. ভাষা ও উচ্চারণ দক্ষতা বৃদ্ধি : এই বয়সে শিশুর শব্দভাণ্ডার বাড়ে এবং সে ভাষা ব্যবহার করতে শেখে। তাই শিশুকে সঠিক শব্দ, স্পষ্ট উচ্চারণ ও বানান শেখানো এই শিক্ষার একটি লক্ষ্য।
10. আত্মশৃঙ্খলা বৃদ্ধি : এই শিক্ষার অন্য একটি উদ্দেশ্য হল শিশুর মধ্যে আত্মশৃঙ্খলা এবং নিয়ম মানার অভ্যাস তৈরি করা। ছোট ছোট নীতিবাক্য বা গল্পের মাধ্যমে শিশুর নৈতিকতা ও শৃঙ্খলাবোধ বৃদ্ধি করা হয়।

2. বাল্যকাল বলতে কি বোঝো ? বাল্যকালের বিকাশগত বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।
অথবা, 
বাল্যকালের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। [XI- 2011, 09, 07]
উত্তর : বাল্যকাল : শৈশবকালের পরবর্তী স্তর অর্থাৎ জীবনবিকাশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল বাল্যকাল। সাধারণত 6-11/12 বছর বয়স পর্যন্ত সময়কালকে বাল্যকাল বলে।
বাল্যকালের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যসমূহ :
দৈহিক বিকাশ : এই স্তরে প্রধান দৈহিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যগুলি হল -
i. উচ্চতা বৃদ্ধি : ৬ থেকে ১১ বছরের শিশুদের প্রথম দিকে উচ্চতা বৃদ্ধি ধীর হয়। ১০ বছর বয়সের পর মেয়েদের উচ্চতা দ্রুত বেড়ে যায়। তবে এই স্তরের শেষের দিকে উচ্চতা প্রায় বৃদ্ধি পায় না।
ii. ওজন বৃদ্ধি : ৬ থেকে ১১ বছরের শিশুদের ওজন বৃদ্ধি ধীর হয়। তবে ১১ বছরের পর ওজন দ্রুত বেড়ে যায়।
iii. দৈহিক কাঠামো : শিশুর দেহের কাঠামো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে পায়ের ও নীচের অংশের বৃদ্ধি বেশি হয়।
মানসিক বিকাশ : এই স্তরে প্রধান মানসিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যগুলি হল -
i. প্রাকৃতিক নিয়মের ধারণা : ১১-১২ বছরের শিশুদের মধ্যে প্রাকৃতিক নিয়ম বোঝার ক্ষমতা জন্মায়। তারা জানার চেষ্টা করে যেমন আকাশ নীল কেন, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কিভাবে হয় ইত্যাদি।
ii. মনোজগৎ ও বহির্জগতের পৃথকতা : এই সময়ে শিশুরা নিজেদের ভেতরের মন ও বাইরের জগতকে আলাদা করতে পারে।
iii. ঘটনার প্রতি কৌতূহল : এই বয়সের শিশুরা ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক, ভৌগোলিক ও বৈজ্ঞানিক ঘটনার প্রতি আগ্রহী হয়।
ভাষার বিকাশ : বাল্যকালে ভাষার বিকাশে যে পরিবর্তনগুলি দেখা যায় সেগুলি হল-
i. ৬ বছর বয়সে শিশু প্রায় ২,৬০০ শব্দ শিখতে পারে, কিন্তু প্রায় ২০,০০০–২৪,০০০ শব্দ বোঝে।
ii. ১১ বছর বয়সে শিশু প্রায় ৫০,০০০ শব্দ শিখতে পারে।
প্রাক্ষোভিক বিকাশ : বাল্যকালে বিভিন্ন ধরনের প্রাক্ষোভিক বিকাশ দেখা যায়। সেগুলি হল-
i. ব্যক্তিগত অনুভূতি : বাল্যকালে ব্যক্তিগত অনুভূতি বৃদ্ধি পায়। শিশুরা যাদের সঙ্গে মেলামেশা করে তাদের কাছ থেকে স্নেহ-ভালোবাসা আশা করে এবং অন্যদেরও ভালোবাসতে শেখে।
ii. আনন্দের অনুভূতি : এই বয়সের শিশুরা আনন্দ অনুভূতিগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাক্ষোভিক প্রতিক্রিয়াগুলি তীব্রভাবে প্রকাশ করে।
ii. আবেগের প্রকাশ : শিশুদের আবেগ এখন নির্দিষ্ট রূপ পেতে শুরু করে। আবেগ প্রকাশে কোনো বস্তুর উপস্থিতি অপরিহার্য নয়। সামাজিক পরিস্থিতিতে তারা কখনও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করলেও, অন্য প্রাক্ষোভের মাধ্যমে তা প্রকাশ পায়।
সামাজিক বিকাশ : এই বয়সে সামাজিক বিকাশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই বয়সের সামাজিক বিকাশগুলি হল -
i. স্বাধীন চেতনা : এই বয়সে শিশুর মধ্যে স্বাধীন চেতনার বিকাশ ঘটে। তারা নিজেরা পরিবেশ, ঘটনা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় এবং নিজের মত সিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করে।
ii. স্বাভাবিক জীবন : এই বয়সের শিশুদের স্বাভাবিক সামাজিক জীবনে অংশগ্রহণ শুরু হয়। তারা নিজের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ কমিয়ে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করতে শেখে।
iii. পারস্পরিক সামাজিক মিথস্ক্রিয়া : শিশুদের পরিবার ছাড়া অন্যদের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ তৈরি হয়। এর ফলে তাদের সামাজিক পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার পরিসর বৃদ্ধি পায়।

3. কৈশোরকাল বলতে কী বোঝো? কৈশোরের দৈহিক ও মানসিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। [XI-2023, 19]
উত্তর : কৈশোরকাল : বাল্যকাল ও প্রাপ্তবয়স্ককালের মধ্যবর্তী সময়কাল হল কৈশোরকাল। কৈশোরকালের সংজ্ঞা নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। তবে  মনোবিজ্ঞানী AT Jersild কৈশোরকাল সংজ্ঞায় বলেছেন, "কৈশোর হল এমন একটি বয়ঃস্তর, যে সময়ে ছেলেমেয়েরাই মানসিক, সামাজিক, দৈহিক ও প্রাক্ষোভিক দিক থেকে বাল্য-কৈশোরের দিকে এগিয়ে চলে।"
কৈশোরের দৈহিক বিকাশগত বৈশিষ্ট্য : 
1. দৈহিক পরিপূর্ণতা : ১৩–১৪ বছর বয়সে শিশুর দৈহিক কাঠামো পূর্ণতা পায়।
2. উচ্চতার বৃদ্ধি : এই বয়সে মেয়েদের উচ্চতা বৃদ্ধির হার ছেলেদের চেয়ে বেশি থাকে এবং ১৬ বছর পর্যন্ত চলে। ১৫ বছরের পর ছেলেদের ও মেয়েদের উচ্চতার পার্থক্য কমে যায়। পরিপূর্ণ অবস্থায় ছেলেদের গড় উচ্চতা মেয়েদের চেয়ে কিছুটা বেশি হয়। ১৮–২০ বছর বয়সে প্রত্যেকে পূর্ণ উচ্চতা লাভ করে।
3. ওজন বৃদ্ধি : সাধারণত ছেলেদের ওজন মেয়েদের চেয়ে বেশি হয়। ১১–১৪ বছর বয়সে মেয়েদের ওজন কিছুটা বেশি হতে পারে, তবে পরবর্তীতে ছেলেদের গড় উচ্চতা ও ওজন মেয়েদের চেয়ে বেশি হয়।
4. যৌন অঙ্গের বিকাশ : ছেলে ও মেয়ের যৌন অঙ্গ পরিপূর্ণ হয়। মেয়েদের অন্যান্য যৌন চিহ্ন প্রকাশ পায়। উভয়ের অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি সক্রিয় হয়। ফলে ছেলে-মেয়ে পরিণত পুরুষ ও নারীতে রূপান্তরিত হয়।
5. স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ : ১৬ বছর বয়সের মধ্যে স্নায়ুতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ হয়। মস্তিষ্কের ওজন বাড়ে না, তবে এর অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ঘটে।
কৈশোরের মানসিক বিকাশগত বৈশিষ্ট্য :
1. মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশ : এই বয়সে ছেলেমেয়েদের মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশ ধীরে ধীরে হয়, তবে তারা মানসিক পরিণমনের দিকে এগোতে থাকে।
2. বাস্তবমুখী চিন্তাধারা : এই বয়সের ছেলেমেয়েদের চিন্তাভাবনা বাস্তবের সঙ্গে মিল রেখে হয়। তারা পরিস্থিতি ও বিষয়গুলির বাস্তব দিক বুঝতে এবং সমাধান করতে সক্ষম হয়।
3. বিমূর্ত চিন্তাশক্তির বিকাশ : বস্তুভিত্তিক অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির ফলে পূর্বে তৈরি ধারণাগুলি বিস্তৃত হয়। এই স্তরের শেষের দিকে তারা বিমূর্ত বিষয়গুলি বোঝতে সক্ষম হয়।
4. কল্পনার বিন্যাস :  এই বয়সের শিক্ষার্থীরা কল্পনার ভিত্তিতে কোনো বিষয়ের প্রতি স্থায়ী ধারণা গঠন করতে পারে।
5. অনুরাগ ও আগ্রহের বিকাশ : এই বয়সে শিশুরা বিশেষ বস্তুর প্রতি অনুরাগ অনুভব করে। আগ্রহগুলি সুনির্দিষ্ট ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়।
6. আবেগপ্রবণতা ও সাহসিকতা : এই বয়সে শিশুরা কৌতূহল, অনুভূতি ও উদ্যমের সঙ্গে সাহস ও বীরত্ব দেখিয়ে বিভিন্ন কাজে এগিয়ে যায় এবং অভিভাবকদের কঠোর শাসনের প্রতি অবজ্ঞা দেখায়।

4. বাল্যকালে শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি বর্ণনা করো। [XI-2011, 07 HS-2006, 04]
অথবা, প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যগুলি কী কী?
উত্তর : বাল্যকাল : মনোবিদ জোনসের মতে বিকাশের স্তরভাগ অনুযায়ী ৫ বছর থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কে বাল্যকাল বলা হয়। এই সময়টি মানুষের জীবনবিকাশের দ্বিতীয় স্তর। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সের মধ্যে যে শিক্ষা দেওয়া হয়, তা প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। এই প্রাথমিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যকেই প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য বলা হয়। এই শিক্ষার লক্ষ্যগুলি হল -
বাল্যকালে শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য :
1. দৈহিক সুস্থতা : শিশুর শরীর যেন সুস্থ ও সবল হয়, তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, পেশি ও গ্রন্থিতে যেন কোনো ত্রুটি না থাকে। এই উদ্দেশ্যই খেলাধুলা ও শরীরচর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য উন্নত করা হয়।
2. সু-অভ্যাস গঠন : শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো অভ্যাস তৈরি করা প্রয়োজন। যেমন - খাওয়ার আগে ও পরে ভালো করে হাত-মুখ ধোয়া, দাঁত দিয়ে নখ না কাটা, নির্দিষ্ট সময়ে পড়তে বসা ইত্যাদি সু-অভ্যাস গড়ে তোলা। এসব অভ্যাস গড়ে উঠলে তারা শৃঙ্খলাবদ্ধ ও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে।
3. কৌতূহলের বিকাশ ঘটানো : প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিশুর মধ্যে জানার আগ্রহ ও কৌতূহলবোধের বিকাশ ঘটানো, যাতে সে নতুন বিষয় জানতে ও শিখতে উৎসাহী হয়।
4. সামাজিক বিকাশ ঘটানো : শিশুর মধ্যে সহযোগিতা, সহানুভূতি ও সেবামূলক মনোভাবের মতো সামাজিক গুণাবলি গড়ে তোলা এবং সমাজের প্রতি কর্তব্যবোধের বিকাশ ঘটানো।
5. জ্ঞান ও দক্ষতার বিকাশ : প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো শিশুর জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাহিত্য, বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস ও ভূগোল বিষয়গুলিতে শিক্ষাদানের মাধ্যমে সাহায্য করা হয়।
6. মানসিক বিকাশ ঘটানো : প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি, বিচারবুদ্ধি, সৃজনশক্তি ও কল্পনাশক্তির মতো মানসিক গুণগুলির সঠিক বিকাশে সহায়তা করা।
7. আবেগ ও প্রক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ : ব্যক্তির সঠিক বিকাশ তার প্রক্ষোভ বা আবেগের নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের উপর নির্ভর করে। তাই প্রাথমিক শিক্ষার একটি প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিশুর আবেগ বা প্রক্ষোভগুলিকে সঠিকভাবে সমন্বয় করা।
8. বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা : বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে, বাল্যকাল থেকেই শিশুর মধ্যে বৈজ্ঞানিক ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে প্রাথমিক শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
9. ভাষার বিকাশ ঘটানো : প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের সুন্দর ও স্পষ্ট ভাষায় নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে শেখানো।
10. সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো : প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো নাচ, গান, আঁকা ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশ করা।
11. মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো : প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের সততা, আদর্শপ্রীতি এবং নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে আদর্শপরায়ণ মহাপুরুষদের জীবনী পড়ানোর মাধ্যমে সাহায্য করে।

5. মাধ্যমিক শিক্ষা কাকে বলে ? মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো। [XI-2007, HS-2005, 03, 02]
উত্তর : মাধ্যমিক শিক্ষা : প্রাথমিক শিক্ষার পরবর্তী স্তর হল মাধ্যমিক শিক্ষা। মানবজীবনের বিকাশের দিক থেকে সমগ্র কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকাল এই শিক্ষাস্তরের মধ্যে পড়ে। বর্তমানে আমাদের দেশে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকেই মাধ্যমিক শিক্ষা বলা হয়। নবম ও দশম শ্রেণি নিয়ে গঠিত স্তরকে নিম্নমাধ্যমিক, আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি নিয়ে গঠিত স্তরকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বলা হয়।
মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য :
1. শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশ : মাধ্যমিক শিক্ষা শিক্ষার্থীর সামগ্রিক বিকাশে সহায়তা করে। এতে সাহিত্য, বিজ্ঞান, গণিত, সমাজবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন জ্ঞানমূলক বিষয় এবং বিভিন্ন কর্ম-অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর উন্নয়ন সাধন করা হয়।
2. সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ : মাধ্যমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ, গুণাবলি এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা গড়ে ওঠে।
3. দায়িত্বশীল নাগরিক গঠন : মাধ্যমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। এটি তাদের মধ্যে সমাজ এবং রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্যবোধ ও সচেতনতা তৈরি করে।
4. নেতৃত্বদানের দক্ষতা : মাধ্যমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম করা। এর মাধ্যমে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে, দলকে পরিচালনা করতে এবং সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
5. নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ : পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারিত্রিক গুণাবলি গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাতে তাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চেতনা জাগ্রত হয়।
6. বৃত্তিমূলক শিক্ষা : মাধ্যমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীর আগ্রহ ও ক্ষমতা অনুযায়ী তাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়া। কারণ এই স্তরের শিক্ষা শেষ করার পর শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশ কর্মজীবনে প্রবেশ করে।
7. বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ : মাধ্যমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত মনোভাব ও যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনা তৈরি করা। কারণ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে স্বাভাবিকভাবে সংযমী, যুক্তিবাদী ও চিন্তাশীল করে তোলে।
8. সৃজনশীলতা ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশ : মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা ও সৌন্দর্যবোধ বিকাশে সাহায্য করে। এর জন্য বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং হাতে কলমে বাস্তব কাজের সুযোগ দেওয়া হয়।
9. শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা : মাধ্যমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও সবল করে গড়ে তোলা। স্বাস্থ্যাভ্যাস বলতে শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের সুস্থতা বোঝানো হয়। বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চা, খেলাধুলা ও যোগব্যায়ামের মাধ্যমে এটি অর্জন করা হয়
10. চিন্তাশক্তি ও অনুসন্ধিৎসা : শিক্ষার্থীরা যেন কল্পনা-শক্তি ও অনুসন্ধিৎসু মননের মাধ্যমে মানসম্পন্ন ও প্রামাণিক যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
🔹 লেখকের শেষ কথা :
'বৃদ্ধি ও বিকাশ' এই অধ্যায় থেকে আমাদের সাজেশন E-Book(PDF)গুলিতে আরো অনেকগুলি 10 নম্বর মানের ও 2 নম্বর মানের খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আছে। সেগুলি পেতে হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন অথবা উপরের Menu Option ক্লিক করে দেখতে পারেন।
File Details :
PDF Name : ক্লাস 11 বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর PDF
Size : 1 MB
No. of Pages : 2
Mode : Read-only (Online)

আরো পড়ুন প্রশ্নোত্তর
1. ক্লাস 11 শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞান PDF Click here
2. চতুর্থ সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর Click here



Regards
WB Semester Team 
📞 & 💬 9883566115

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.